ট্রাম্পের আমেরিকা নিজেকে গুটিয়ে নিলে কি চিনের পোয়াবারো? চিনা পত্রিকা বলছে "না"
ওয়াশিংটন এবং বেজিং কেউই কাউকে হারাতে পারবে না; তাদের উচিত তাই একে ওপরের সঙ্গে সহযোগিতা করার
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশনীতির অনেক ক্ষেত্রেই নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট যেভাবে বেঁকে বসেছেন বা প্যারিস পরিবেশ চুক্তি থেকে পিছিয়ে আসতে চাইছেন, তাতে এই ধারণা ক্রমেই গাঢ় হচ্ছে ওয়াশিংটনের মিত্রদের মধ্যে। আর আর মধ্যেই পশ্চিমের অনেক মহলের মনেই যে প্রশ্নটি উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে, তা হল: তবে কি চিন ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা নিতে চলেছে?
এ ব্যাপারে চিন কী ভাবছে?
চিনের গ্লোবাল টাইমস পত্রিকায় সম্প্রতি একটি সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে এই বিষয়ে। তাতে বলা হয়েছে ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারে মার্কিন বিদেশনীতিতে পশ্চাদপসরণের কথা বললেও বিশ্বায়নের দুনিয়ায় যেহেতু ওয়াশিংটন একটি কেন্দ্রীয় শক্তি, তাতে ট্রাম্প প্রথাগতভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী অবস্থান নেবেন বলে মনে হয় না।
"ক্যান চায়না ওভারটেক ইউএস টু লিড দ্য ওয়ার্ল্ড" শীর্ষক ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে যে ঠান্ডা যুদ্ধ-উত্তর বিশ্বব্যবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একপেশে দাপট দেখানোর ফলে এখনকার বিশ্বব্যবস্থায় তাদের বিরাট প্রভাব এবং রাতারাতি এই অবস্থানে বদল আনা সম্ভব হবে না, এমনকী আমেরিকা নিজে চাইলেও না।
চিনা পত্রিকাটির মতে গত কয়েক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুনিয়ার সব বিষয়ের উপরেই আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। "ট্রাম্প চেষ্টা করছেন আমেরিকার এই নেতৃত্বের ধরনটিকে পাল্টাতে, যাতে যে সমস্ত ক্ষেত্রে মার্কিন সম্পদ নষ্ট হচ্ছে, সেখান থেকে সেদেশকে বের করে আনা যায়। তাতে চিনের সামনে সুযোগ অবশ্যই আসে কিনতু প্রশ্ন হচ্ছে: চিন কতটা তৈরি সেই ভূমিকার জন্য?" প্রশ্ন ডেইলি টাইমস-এর।
ডেইলি টাইমস স্বীকার করে নেয় যে এখনও সার্বিক শক্তিতে মার্কিনিদের মোকাবিলা করতে চিন সমর্থ নয়। বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো জায়গায় চিন যেমন এখনও পৌঁছয়নি, তেমনি মানসিকভাবে চিন বা বাকি বিশ্ব তৈরি নয় সেরকম পরিস্থিতির জন্য। আমেরিকাকে সরিয়ে চিন বিশ্বের প্রধান নেতা হয়ে উঠবে, এমন ধারণা করাটাও ভুল, বলছে গ্লোবাল টাইমস।
তবে গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে চিন যেভাবে উন্নতি করেছে, তাতে আজকের বিশ্ব নেতৃত্বে যোগ দেওয়াটা বেজিং-এর কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। ওয়াশিংটন যাই করুক, চিনের উচিত নিজের দায়িত্বের প্রতি অনুগত থাকা। অবশ্য তাতেও যা ক্ষতি হবে তা মেরামতি করার ক্ষমতা চিনের নেই বলেই অভিমত গ্লোবাল টাইমস-এর প্রতিবেদনটির।
তাতে বলা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা চিন যেহেতু কেউই কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হারাতে পারবে না, তাই দু'জনেরই উচিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো।