বঙ্গের এটিএমগুলিতে নাকি টাকা উপচে পড়ছে? আঞ্চলিক নেত্রীকে কি তবে ঘরে পাঠিয়ে দিলেন মোদী?
আজ যদি টাকা তুলতে আর কোনও সমস্যা না থাকাতে বঙ্গবাসী মোদীকে সাধুবাদ জানায়, তাহলে মমতার আপত্তি কতটা ধোপে টিঁকবে?
শোনা
যাচ্ছে
পশ্চিমবঙ্গে
নাকি
এটিএম-এর
সামনে
লম্বা
লাইন
পড়ছে
না
বিশেষ।
লোকজন
খুশি
মনেই
নোট
বের
করে
আনছেন।
কেউ
কেউ
কেন্দ্রকে
সাধুবাদও
দিচ্ছেন।
তাহলে
কি
প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র
মোদীর
সাহসী
পদক্ষেপের
সুফল
দেখা
যেতে
শুরু
করল?
কালো
টাকার
কারবারিদের
জালে
পড়ার
পাশাপাশি
সাধারণ
মানুষের
দুঃখ
কষ্টও
ঘুচতে
শুরু
করল?
নাকি
পশ্চিমবঙ্গকে
বিশেষ
সুবিধে
পাইয়ে
দেওয়া
হল?
যদি তেমনটাই হয়ে থাকে, তবে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই এই সিদ্ধান্তের কড়া বিরোধিতা করছেন। এমনকী, প্রশাসনিক কাজকর্ম ফেলে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে গিয়েও এই নিয়ে সরব হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন। মোদী এবং তাঁর দলের নেতারাও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। আর এসবের মধ্যে যদি হঠাৎ শোনা যায় যে তৃণমূল নেত্রীর নিজের রাজ্যের এটিএমগুলি সুজলাং সুফলাং হয়ে উঠেছে, তবে একটি প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়ে: কেন্দ্র কি মমতার মোকাবিলা করতেই পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বিশেষ 'দয়া' দেখাচ্ছে?
অসম্ভব নয়। পর পর দু'বার বঙ্গজয়ের পড়ে মমতা স্বাভাবিকভাবেই এখন দিল্লির পানে চাইছেন। ইদানিংকালে কংগ্রেস সহ বিভিন্ন দলের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন মোদীর মোকাবিলার জন্যে একটি মঞ্চ গড়ে তোলার জন্য। ধর্মনিরপেক্ষতার জিগির তুলে সমস্ত বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে হাত মেলানোর জন্য আবেদন করেছেন। এতে স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি অস্বস্তিতে পড়বে।
আর তাই ডিমনেটাইজেশন প্রসঙ্গে মমতা বিরোধিতার ঝড় তুলে যাতে সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়ে না যান, তার প্রতি বিজেপির নজর ছিল বরাবরই। সাধারণ মানুষের সমর্থনের বিরুদ্ধে সারদা-নারদ কাণ্ডের স্মৃতি উস্কে পাল্টা আঘাতও হেনেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
কিনতু বঙ্গের এটিএমগুলি ফুলে ফেঁপে ওঠার মধ্যে নিঃসন্দেহে একটি মাস্টারস্ট্রোক রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাবতীয় বিরোধিতা মুহূর্তের মধ্যে নস্যাৎ করে দেওয়া সম্ভব এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে। যদি রাজ্যবাসীর আর কোনও সমস্যা না থাকে, তাহলে আপনার কি সমস্যা?
এই প্রশ্নটি তুলে নেত্রীকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে বিজেপি। অবশ্য, জনপ্রিয় নেত্রী সেক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের মানুষের হয়ে লড়তেই পারেন কিনতু তাঁর লড়াই করার পরিধিটি ছোট হয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। তবে কি পশ্চিমবঙ্গে নোটের দেদার সরবরাহ পাকা করে আঞ্চলিক নেত্রীকে নিজের ঘরেই ফেরত পাঠালেন মোদী?
আধুনিক রাজনীতিবিদ মোদী বিপণনের রাজনীতিটি খুব ভালো বোঝেন বলেই তাঁকে হারানো খুব সহজ কাজ নয়। সেকারণেই হয়তো নীতীশকুমার মমতার মতো পথে নেমে মোদীর বিরুদ্ধাচরণ করেননি। তাতে তাঁর প্রশাসকের ভাবমূর্তি খর্ব হতে পারে জেনেই তিনি সেটা করেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অতশত ভাবার পাত্রী নন। কিনতু এটিএমগুলিতে পয়সা এসে গেলে যদি মধ্যবিত্তই মোদীর উপর তুষ্ট হয়ে তাঁর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেন, তাহলে কতটা মাইলেজ তিনি পাবেন?