জেনে নিন মাইসোরের বিশ্বখ্যাত 'দশেরা' উদযাপনের অজানা তথ্য, ইতিহাস
আলোর রোশনাই আর রঙবেরঙের রাজকীয় সাজে এই মরশুমে সেজে ওঠে মাইসোরের রাজবাড়ি। কেমন এই উৎসব, কী ইবা এর রীতিনীতি জেনে নেওয়া যাক।
দেশজুড়ে দুর্গাপুজো ও নবরাত্রির উৎসবের মধ্যেই সাজোসাজো রবে তৈরি হচ্ছে কর্ণাটকের মাইসোর। মাইসোরের 'দশেরা'-র আয়োজনের জাঁকজমক জগদ্বিখ্যাত। আলোর রোশনাই আর রঙবেরঙের রাজকীয় সাজে এই মরশুমে সেজে ওঠে মাইসোরের রাজবাড়ি। কেমন এই উৎসব, কী ইবা এর রীতিনীতি জেনে নেওয়া যাক।
মাইসোরের দশেরা
কর্ণাটকে মাইসোরের এই রাজকীয় উৎসব 'নদাহাব্বা' নামে পরিচিত। দশেরার দিন আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অন্ধকারের ওপর আলোর জয়কে চিহ্নিত করে। বিস্তারিতভাবে বললে বলা যায়, খারাপের ওপর ভালোর জয়কেই এখানে চিহ্নিত করা হয়।
দশেরার রীতি
প্রথমে মাইসোর রাজবংশের বর্তমান রাজদম্পতি চামুন্ডি মন্দিরে পুজো অর্পণ করেন। উল্লেখ্য, এই মন্দির চামুন্ডি পর্বতে অবস্থিত। এরপরই শহরজুড়ে নান বর্ণাঢ্য উৎসব উদযাপিত হয়। উৎসবে যোগ দিতে আসা মানুষ জন সোনার বিভিন্ন রকমের গয়না পরে আসেন। এছাড়াও প্রচুর রকমের খাবারের বন্দোবস্ত থাকে রাস্তার ধারে।
শোভাযাত্রা
শোভাযাত্রায় হাতির পিঠে চামুণ্ডেশ্বরীর মূর্তি নিয়ে চলা হয়। সোনার মন্তাপাতে নিয়ে যাওা হয় দেবীকে। এই মাইসোর দশেরার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল হাতি নিয়ে শোভাযাত্রা। এছাড়াও উট,ঘোড়া নিয়েও রঙবেরঙের শোভাযাত্রা বের হয় এখানে। সঙ্গে থাকে ব্যান্ড নিয়ে শোভাযাত্রা।
শোভাযাত্রার গন্তব্য
দেবী চামুন্ডেশ্বরীর মূর্তি নিয়ে এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষ হয় বন্নিমন্তাপাতে। এখানে 'বান' গাছ বা বটগাছের কাছে এসে থেমে যায় এই শোভাযাত্রা। কথিত আছে এই বটগাছেই অজ্ঞাতবাসের সময়ে অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছিলেন পাণ্ডবরা।
মাইসোরের দশেরার ইতিহাস
মাইসোরের ৪০০ বছরের পুরনো এই উৎসবের সূচনার নেপথ্যে রয়েছে এক ঐতিহাসিক কাহিনি। ১৫ শতাব্দীতে বিজয়নগরের রাজারা এই উদযাপন শুরু করেন। কথিত রয়েছে, মাইসোরের রাজা ছিলেন মহিষাসুর।
দুর্গা-মহিষাসুর লড়াই
বলা হয়, মহিষাসুর রাজা থাকাকালীন মাইসোরে যাঁরাই ভগবানকে পুজো করতেন তাঁদেরই শাস্তি দিতেন মহিষাসুর। তখনই মহিষাসূরের হাত থেকে বাঁচতে সেখানের মানুষ সাহায্য চান মা দুর্গার। এরপর দীর্ঘ লড়াইয়ে চামুন্ডি পর্বতে মহিষাসুরের বিনাশ করেন মা দুর্গা। এরপর থেকেই চামুন্ডি পর্বতে প্রতিষ্ঠিত হয় মা দুর্গার মন্দির। দশেরার দিন পালিত হয় চামুন্ডেশ্বরি পুজো।
মাইসোর পৌঁছনোর পথ
আকাশপথে গেলে , বেঙ্গালুরুর বিমানবন্দরে নামতে হবে। সেখান থেকে গাড়ি ভাডা় করে মাইসোর পোঁছতে হবে। রেলপথে মাইসোর স্টেশনে নামলেই পরে গাড়ি কের যাওয়া যায় মাইসোর রাজবাড়ি সংলগ্ন এলাকায়। বেঙ্গালুরুর থেকে প্রায় ১৩৯ কিলোমিটারের রাস্তা মাইসোর। এজন্য রাজ্যসড়ক ধরে চলাই এই সফরে সহজ পথ। এছাড়াও বেঙ্গালুরু থেকে বাসে মাইসোর যাওয়ারও সহজ উপায় রয়েছে।