জানেন কোথায় আছে দ্বিতীয় দক্ষিণেশ্বর মন্দির, কলকাতার কাছেই একদিনেই বেড়িয়ে আসা যায়
অন্নপূর্ণা মন্দিরটিও তৈরি করেছিলেন রানি রাসমনির বংশধররাই। এক বেলার ছুটিতেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসা যায়।
দক্ষিণেশ্বর মন্দির তো অনেকেই দেখেছেন। গিয়েছেন বহুবার। পুজো দিয়েছেন। কিন্তু কেউ কি জানেন আরেকটি দক্ষিণেশ্বর মন্দির রয়েছে। সেটাও আবার গঙ্গার পূর্ব পাড়ে অর্থাৎ ব্যারাকপুরে তৈরি হয়েছে সেই মন্দির। এই মন্দির অবিকল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের মতই। কেবল এখানে মা ভবতারিনীর জায়গায় বিরাজ করেন মা অন্নপূর্ণা। অন্নপূর্ণা মন্দিরটিও তৈরি করেছিলেন রানি রাসমনির বংশধররাই। এক বেলার ছুটিতেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসা যায়।
দ্বিতীয় দক্ষিণেশ্বর
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলেই ৈতরি মা অন্নপূর্ণার মন্দির। শুধু তার স্থানটি উল্টোদিকে। যেদিকে মা ভবতারিনীর মন্দির রয়েছে সেরকমই গঙ্গার পাড়েই ব্যারাকপুরে তৈরি হয়েছে মা অন্নপূর্ণার মন্দির। অবিকল দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের আদলে সেটি তৈরি। অনেকেই জানেন না এই মন্দিরের কথা। স্বয়ং রামকৃষ্ণ এখানে এসেছিলেন চারবার। এখানেও রয়েছে রাসমনি ঘাট। যেথানে রামকৃষ্ণ নিজে স্নান করে গিয়েছেন। এমনকী মন্দিরটি উদ্বোধনেরও সময়ও রামকৃষ্ণ নিজে ছিলেন সেখানে।
তৈরি করেছিলেন রানি রাসমনির মেয়ে
মা ভবতারিণীর মন্দির তৈরির নেপথ্যে যেমন একটি গল্প রয়েছে। সেরকমই এই মা অন্নপূর্ণার মন্দির তৈরির নেপথ্যেও একটি গল্প রয়েছে। কাশী যাওয়ার পথে স্বপ্নাদেশ পেয়ে ফিরে এসে রানি রাসমনি গঙ্গার পাড়ে তৈরি করেছিলেন দক্ষিণেশ্বর মন্দিরটি। সেরকমই কাশি যেতে না পেরে তাঁর জামাতা মথুরা মোহন অন্নপূর্ণা মন্দির তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জীবিত অবস্থায় িতনি সেটা তৈরি করতে পারেননি। তার ইচ্ছে পূরণ করেছিলেন তাঁর স্ত্রী জগদম্বা। রানি রাসমনির দ্বিতীয় কন্যা। স্বয়ং রামকৃষ্ণ নিজে উপস্থিত ছিলেন সেই মন্দিরের উদ্বোধনে।
অবিকল দক্ষিণেশ্বর মন্দির
অবিকল দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলেই তৈরি করা হয়েছে এই মা অন্নপূর্ণার মন্দির। সেটি তৈরি করেছিলেন যাঁরা তাঁরা দক্ষিণেশ্বর মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। সেকারণেই অনেকটা সেরকম করেই তৈরি করা হয়েছে অন্নপূর্ণা মন্দিরও। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের মতই মূল মন্দিরের পাশে একটা নাট মন্দিরও রয়েছে। আবার মন্দিরের চারপাশে রয়েছে ৬টি আট চালার শিব মন্দির। তার প্রতিটিতে তিন ফুটের শিবলিঙ্গ রয়েছে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে রয়েছে ১২টি। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের মতই উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা মন্দিরটি। রয়েছে একটি লোহার দরজা। আর সিং দরজার উপরে রয়েছে একটি সিংহের মূর্তি।
কীভাবে যাবেন
এই অন্নপূর্ণা মন্দিরে যেতে হতে ব্যারাকপুর আর টিটাগড়ের মাসে তালতলা বাসস্টপেজে নামতে হবে। সেখান থেকে রিকশা-টোটো কিম্বা হেঁটে পৌঁছে যাওয়া যায় এই অন্ন পূর্ণা মন্দিরে। প্রতিমাসে শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এখানে বিশেষ পুজো হয়। কালীপুজোর পরের দিন বড় করে হয় অন্নকূট উৎসব। অষ্টধাতুর তৈরি এখানকার অন্নপূর্ণার মন্দির। পরানো থাকে বেনারসি শাড়ি। গায়ে থাকে সোনার গয়না। রুপোর সিংহাসনে বসানো থাকে অষ্টধাতুর মা অন্নপূর্ণার মন্দির। প্রতিদিন অন্নভোগে থাকে মাছ। আর অন্নপূর্ণা পুজোর দিন বড় করে অন্নকূট উৎসব হয়ে থাকে।
ছবি সৌ:ইওর বঙ্গ বাডিজ/ইউটিউব