পরবর্তী মহামারী আসছে গলিত হিমবাহ থেকে! জলবায়ু পরিবর্তনের কোপে বিশ্ব
পরবর্তী মহামারী আসছে গলিত হিমবাহ থেকে! জলবায়ু পরিবর্তনের কোপে বিশ্ব
করোনা ভাইরাসের মহামারী এখনও বিশ্ব থেকে পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। এখনও সংক্রমণ হয়ে চলেছে। তবে বিশ্বব্যাপী যে ত্রাসের সঞ্চার হয়েছিল, তা এখন অনেকটাই কমেছে। কিন্তু এই মহামারীর মাঝেই ফের নতুন ভয় হয়ে দেখা দিয়েছে অন্য ভাইরাস। সেই ভাইরাস কোনও পাখি বা বাদুড়ের মাধ্যমে আসবে না, আসবে না মানুষের কাছ থেকেও। এবার ভাইরাস আসবে হিমবাহ থেকে।
হিমবাহের নীচে লুকিয়ে থাকা ভাইরাসে আতঙ্ক
জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়ছে, আর তার ফলে হিমবাহ গলছে। এত দ্রুত হিমবাহের গলন হচ্ছে যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে ভাইরাসও। সেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বব্যাপী। ফলে আগামী দিনে আরও একটি ভয়াবহ ভাইরাস মহামারীর রূপ নিতে পারে। হিমবাহের নীচে লুকিয়ে থাকা ভাইরাস ক্রমে বেরিয়ে আসছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে দ্রুত বিশ্বব্যাপী পরিবেশ প্রভাবিত
মাটির জেনেটিক বিশ্লেষণ করে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার বার্তা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তা দ্রুত সংক্রমণও ঘটাতে পারে। বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় গবেষকরা এর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তন দ্রুত বিশ্বব্যাপী পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
নয়া ভাইরাসও মহামারীর আকার নিতে পারে
বিজ্ঞানীদের জন্য সবথেকে বড় উদ্বেগের বিষয় হল গলিত হিমবাহ। কারণ, পারমাফ্রস্ট বা স্থায়ীভাবে হিমায়িত ওজন অপসারণের ফলে হিমবাহের মধ্যে আটকে থাকা ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াগুলি আনলোড হতে পারে। এই ভাইরাসগুলি বণ্যপ্রাণীকে সংক্রামিত করতে পারে, যা ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে জুনোসিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। সার্স-কোভ-টুয়ের মতোই এর প্রকৃতি। সার্স-কোভ-টু যেমন কোভিড ১৯-কে মহামারীর দিকে পরিচালিত করেছিল, এই নয়া ভাইরাসেও মহামারীর আকার দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
গবেষণাপত্রে যা জানিয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা
গবেষকরার তাঁদের গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন যদি প্রজাতির সম্ভাব্য ভাইরাল ভেক্টর এবং জলাধারের পরিসরকে উত্তর দিকে সরিয়ে দেয়, তাহলে উচ্চ আর্কটিক উদীয়মান মহামারীর জন্য উর্বর ভূমিতে পরিণত হতে পারে। গবেষক দলটি পৃথিবীর বৃহত্তর হাই আর্কটিক হ্রদ লেক হ্যাজেন থেকে মাটি এবং পলির নমুনা সংগ্রহ করতে পারে এবং পরিচিত ভাইরাসগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিলে যাওয়া স্বাক্ষরগুলি শনাক্ত করতে এবং নমুনাগুলিতে আরএনএ এবং ডিএনএ অনুক্রম করতে পারে।
নতুন আবিষ্কৃত ভাইরাসগুলি তিব্বতের হিমবাহেও
বিজ্ঞানীরা ২০২১ সালে হিমবাহ নিয়ে গবষণা করার সময় মোট ৩৩টি ভাইরাস আবিষ্কার করেছিলেন, সেগুলি ১৫ হাজার বয়সেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত ছিল। এর মধ্যে ২৮টি ছিল নতুন ভাইরাস। নতুন আবিষ্কৃত ভাইরাসগুলি তিব্বতের হিমবাহে পাওয়া গিয়েছে, যা গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে গলে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।