সময়ের কিনারায় পাওয়া সূর্যের কবরস্থান! মানচিত্র তৈরি করে ফেলেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা
সময়ের কিনারায় পাওয়া সূর্যের কবরস্থান! মানচিত্র তৈরি করে ফেলেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যের কবরস্থানের একটি মানচিত্র তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিকে জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে কী পরিস্থিতি দাঁড়াবে, সেই চিত্রই দেখানো হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তৈরি ওই মানচিত্রে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো গ্যালাক্সিতে কবরস্থানের যে মানচিত্র তৈরি করেছেন, তা প্রাচীন মৃত তারার সমন্বয়ে গঠিত।
গ্যালাকটিক আন্ডারওয়ার্ল্ডের মানচিত্র
মিল্কি ওয়ের বিশালতা অন্বেষণকারী জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানান, এটি একটি অনন্য জায়গা, যেখানে শত শত হাজার হাজার সূর্য রয়েছে। যে সমস্ত সূর্যের জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়েছ, তা এখন ব্ল্যাক হোলে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। গ্যালাকটিক আন্ডারওয়ার্ল্ড মিল্কিওয়ের প্রায় তিনগুণ উচ্চতাসম্পন্ন। এক সময়ের বিশাল সূর্যের মৃতদেহের একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল এই গ্যালাকটিক ওয়ার্ল্ডে।
মৃত সূর্যের থেকে মিল্কিওয়ের মতো দেখতে মানচিত্রটি ভিন্ন
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন, এই নিউট্রন নক্ষত্রগুলি গঠিত হয়, যখন আমাদের সূর্যের থেকে আট গুণেরও বেশি বড় তারা তাদের জ্বালানি নিঃশেষ করে এবং হঠাৎ করে তা ভেঙে পড়ে। মিল্কিওয়েতে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া মৃত সূর্যের থেকে মিল্কিওয়ের মতো দেখতে মানচিত্রটি অবশ্য ভিন্ন। সাইড অন ভিউতে দেখা যায়, গ্যালাকটিক আন্ডারওয়ার্ল্ড মিল্লিকওয়ের থেকে অনেক বেশি ফুলে রয়েছে ওই মানচিত্রটি।
মানচিত্রটি প্রায় এক তৃতীয়াংশ বস্তু ধারণ করে
মানচিত্রটির ওই অবস্থানটি প্রায় এক তৃতীয়াংশ বস্তু ধারণ করে, যেগুলি গ্যালাক্সি থেকে সম্পূর্ণভাবে বেরিয়ে এসেছে। রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটিতে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে গ্যালাকটিক আন্ডারওয়ার্ল্ডের মৃত নক্ষত্রের এই কমপ্যাক্ট অবশিষ্টাংশ দৃশ্যমান গ্যালাক্সিতে মৌলিকভাবে ভিন্ন বণ্টন এবং কাঠামো প্রদর্শন করে।
যখন নক্ষত্রগুলি তৈরি হয়েছিল তখন ছায়াপথটির অল্প বয়স
গবেষকরা জানান, যখন এই নক্ষত্রগুলি তৈরি হয়েছিল তখন ছায়াপথটির অল্প বয়স ছিল। তাদের তৈরি করা সুপারনোভা দ্বারা আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশের অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। ফলে তারা বিজ্ঞানের কাছে অদৃশ্য করে তুলেছিল। সিডনি ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমির জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের দলটি প্রাচীন মৃত নক্ষত্রগুলির সম্পূর্ণ জীবনচক্র পুনরায় তৈরি করেছে। তাদের মৃতদেহগুলি কোথায় রয়েছে তা দেখানো প্রথম বিশদ মানচিত্র এইটি।
নিউট্রন নক্ষত্র এবং ব্ল্যাকহোল তৈরির সময় গ্যালাক্সিটি ছোটো ছিল
সিডনি ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমির ছাত্র ও গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক ডেভিড উইনি বলেন, এখন পর্যন্ত তাঁদের কোনও ধারণা ছিল না যে এই প্রাচীন মৃতদেহগুলি কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে। কারণ প্রাচীনতম নিউট্রন নক্ষত্র এবং ব্ল্যাকহোল তৈরি হয়েছিল যখন গ্যালাক্সিটি ছোটো ছিল। তারপর কোটি কোটি বছর ধরে জটিল পরিবর্তনের শিকার হয়েছিল নক্ষত্রগুলি।
পৌরাণিক হাতির কবরস্থান খুঁজে বের করার মতো ঘটনা
গবেষণার সহ লেখক অধ্যাপক তুথিল বলেন, এটি পৌরাণিক হাতির কবরস্থান খুঁজে বের করার মতো ঘটনা। কিন্তু তারা নিজেদেরকে রহস্যে আচ্ছন্ন করে রেখেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকী আমাদের সূর্যের ওইসব নক্ষত্র থাকতে পারে। তারা প্রস্তাব করে নিকটতম অবশিষ্টাংশটি কেবল ৬৫ আলোকবর্ষ দূরে হওয়া উচিত।
বামন সূর্যের চারপাশে ঘুরছে সুপার আর্থ, গ্রহটিতে প্রাণের সম্ভাবনা নিয়ে কী বলছেন বিজ্ঞানীরা