রাত নামলেই শোনা যায় কান্নার আওয়াজ, বিকট শব্দ! ভূতের আতঙ্কে কাঁটা বাসিন্দারা
সূর্য একবার ডুবলেই হল। বাড়ি থেকে ভেসে আসতে থাকে বিকতট সব শব্দ। কখনও চিৎকাল শোনা যায়, কখনও পাওয়া যায় ধান ঝাড়ার শব্দ। আবার পুকরে ঝাঁপ দেওয়ার শব্দও মেলে মাঝে-মধ্যে।
সূর্য একবার ডুবলেই হল। বাড়ি থেকে ভেসে আসতে থাকে বিকতট সব শব্দ। কখনও চিৎকাল শোনা যায়, কখনও পাওয়া যায় ধান ঝাড়ার শব্দ। আবার পুকরে ঝাঁপ দেওয়ার শব্দও মেলে মাঝে-মধ্যে। সন্ধ্যের পর থেকেই ভূতের আতঙ্কে কাঁটা হয়ে থাকেন এলাকার বাসিন্দারা। পুরো দেগঙ্গা ভূতের আতঙ্কে কাঁটা।
উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুরে একটি পরিত্যক্ত বাড়িকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে ভূতের আতঙ্ক। আগে ওই জায়গায় ছিল মিলিটারি ক্যাম্প। স্বাধীনতার পর তৈরি হওয়া ওই ক্যাম্পে জওয়ানরা থাকতেন। তাঁদের আসা-যাওয়া বন্ধ হয়েছে বেশ কিছুদিন। তারপর ওই ক্যাম্পে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষেরা থাকতেন। অর্থাৎ প্রতিবন্ধীদের ক্যাম্প ছিল ওই বাড়িতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ২০ বছর হল প্রতিবন্ধীদের ক্যাম্পও উঠে গিয়েছে ওই বাড়ি থেকে। এখন ওই মিলিটারি ক্যাম্পের বাড়িটিতে ভর্তি করে রাখা হয় খড়। বারান্দায় ঘুরে বেড়ায় গরু, জানলা-দরজা ভাঙা। দিনের বেলাতেই সেই পোড়ো বাড়িতে গা ছমছম করে। আর সন্ধ্যার পরই তা হয়ে ওঠে ভূতের বাড়ি।
সূর্য ডুবে যাওয়ার পর আর কেউ ওই বাড়ির দিকে যায় না। এমনকী ভয়ে কেউ তাকিয়েও দেখান না ওইদিকে। কিন্তু আওয়াজ তো আটকাতে পারেন না কেউ। স্থানীয়দের কানে আসে নানা বিকট আওয়াজ। আচমকা জানলা-দরজা বন্ধ করার আওয়াজের সঙ্গে মাঝে মাধে শোনা যায় কান্নার আওয়াজ। কেউ যেন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
ওই বাড়িটির জন্য দেগঙ্গার বিশ্বনাথপুরে কেই সন্ধ্যার পর ওই বাড়র রাস্তায় পা মাড়ান না। ওই বাড়ির আশেপাশে যাঁরা থাকেন, তাঁরা বাড়ি থেকে বের হওয়ার সাহসও দেখান না। স্থানীয়রাই বলেন, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই বাড়ি থেকে বিভিন্ন ধরনের বিকট আওয়াজ আসতে থাকে। যার ফলে ঘুম উড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
তবে ভূতের আতঙ্কের আড়ালে ওই পরিত্যক্ত ক্যাম্প ঘিরে অসামাজিক ক্রিয়াকলাপ চলছে বলেও স্থানীয়দের একাংশ মনে করছেন। ফলে সেদিক দিয়েও ওই বাড়িটি আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। পুলিশ-প্রশাসনের তরফেও সেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছেন, বেশ কয়েকবার ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
একাংশের দাবি, অসামাজিক কাজকর্মের জন্য পরিকল্পনামাফিক ভূতের আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। কিছু লোক এই ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে নিশ্চিন্তে অসামাজিক ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যেতে চাইছে। স্থানীয়রা দাবি জানিয়েছেন, ওই পুরনো মিলিটারি ক্যাম্পের ঐতিহ্য বজায় রাখা হোক। কোনও সরকারি কাজে তা ব্যবহার করার হোক এবং অবিবৃলম্বে তা সংস্কারের আর্জি জানান তাঁরা।