অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরা, কোন পথ ধরে তৃণমূলে ফিরলেন ‘প্রাক্তনী’ তন্ময়
২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট থেকেই শাস্তি ভোগ করে চলেছেন তিনি। একটিবারও দলের প্রতি বিতৃষ্ণা দেখাননি। বরং অপেক্ষা করছেন- কবে দিদির ডাক আসে।
২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট প্রকাশ্য সভায় জমি দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় মণ্ডলকে তিরস্কারের পর দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই থেকেই শাস্তি ভোগ করে চলেছেন তিনি। একটিবারও দলের প্রতি বিতৃষ্ণা দেখাননি। বরং অপেক্ষা করছেন- কবে দিদির ডাক আসে। অবশেষে তন্ময়ের আবেদন শুনলেন মমতা। ফের তাঁকে ঠাঁই দিলেন দলে। শেষ হল তাঁর শাস্তি ভোগের পালা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তন্ময়কে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তারপরই মমতার নির্দেশে তন্ময়কে দলে ফিরিয়ে নিতে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও পূর্ণেন্দু বসুকে। সেইমতো পূর্ণেন্দু বসু বলেন, নেত্রী অনুমোদন দিয়েছে তন্ময়কে দলে ফিরিয়ে নেওয়া ব্যাপারে আমরা একযোগে কাজ করব। আমরা কেউ আলাদা নই। এই দলে ফেরানোর সিদ্ধান্ত তা আবার প্রমাণ করল।
একইসঙ্গে পূর্ণেন্দুবাবু জানান, আজ পর্যন্ত তাঁদের সরকার রাজারহাটে এক ইঞ্চি জমি জোর করে দখল করেনি। আমাদের সরকার আসার পর মুখ্যমন্ত্রীর যে বক্তব্য ছিল, সেই বক্তব্য থেকে এক চুলও সরে আসিনি আমরা। তাহলে কেন জমি দুর্নীতিতে নাম জড়ানো তন্ময় মণ্ডলকে ফিরিয়ে নেওয়া হল? এ প্রসঙ্গে পূর্ণেন্দুর যুক্তি, দলের সংবিধান মেনেই দলে ফেরানো হয়েছে তন্ময় মণ্ডলকে।
তিনি ব্যাখ্যা দেন, একজন মানুষ ৯ বছর শাস্তি ভোগ করল। পার্টির বাইরে রইল। তবু অন্য কোনও দলে যায়নি সে। বারবার আমাদের কাছেই ফিরে এসেছে। আর কাউকে সাসপেন্ড করলে সেই শাস্তির মেয়াদ থাকে ৬ বছর। তন্ময় তো ৯ বছর সাসপেনশন ভোগ করেছে। তাই দল এ ব্যাপারে সংবিধান মেনেই তাকে ফিরিয়ে নিয়েছে। তাকে আর একটা সুযোগ দিয়েছে।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, রাজারহাটে আমাদের শক্তি বাড়ল। তন্ময়দা কোনওদিন অন্য দলে যাননি, শত প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন অন্য দলের। কেননা তন্ময়দা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের শরিক হতে চান। উনি, সেভাবেই বারবার দলের কাছে আবেদন করেছেন। এবার সেই আবেদনে মান্যতা দেওয়া হল।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক প্রস্তাব রেখেছেন, তন্ময় মণ্ডলকে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার গুরুত্ব পূর্ণ দায়িত্বে দেওয়া ব্যাপারে। সেইসঙ্গে উত্তর দমদম-এর পর রাজারহাট-গোপালপুর-নিউটাউনের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়েও কড়া বার্তা দিল শাসক দল। প্রাক্তন বিধায়ক এবং দলের পুরনো কর্মী তন্ময় মণ্ডলকে দলে নিয়ে বিশেষ এক শ্রেণিতেও কড়া বার্তা দেওয়া হল।
রবিবারের যোগদান অনুষ্ঠানে পূর্ণেন্দু বসু ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন নির্মল ঘোষ, অর্জুন সিংহ, দেবরাজ চক্রবর্তী, শঙ্কর নারায়ণ দত্ত, শীলভদ্র দত্ত প্রমুখ। তবে ছিলেন না বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, নিউটাউনের বিধায়ক এবং বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তকে কোণঠাসা করতেই তন্ময়কে দলে ফেরানো হল।