মুকুলের কি‘মান’রইল! পঞ্চায়েতে বিজেপির মুখ কারা, কারা ব্রাত্য, জেনে নিন
এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূল বা বিজেপি দুই দলের কাছেই। কেননা একদল হারিয়েছে দলের দু’নম্বরকে আর একদল সেই দু’নম্বরকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত। তাই আগেভাগেই কৌশল নির্ধারণ হয়ে গেল বিজেপিতে।
দামাম বেজে গিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচন মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূল বা বিজেপি দুই দলের কাছেই। কেননা একদল হারিয়েছে দলের দু'নম্বরকে আর একদল সেই দু'নম্বরকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত। নতুন করে অক্সিজেন পেয়ে ভোট-যুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাতে শুরু করেছে শাসকদলকে।
তাই আগেভাগেই পঞ্চায়েত যুদ্ধের কৌশল স্থির করতে কোর কমিটির বৈঠকে বসেছে রাজ্য বিজেপিতে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলের রাজ্য দফতরে বৈঠক করে নির্ধারণ করলেন আসন্ন পঞ্চায়েতে কারা দলে প্রচারের মুখ হবেন। বিজেপির রাজ্য পর্ষবেক্ষক তথা কেন্দ্রীয়নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় পৌরহিত্যে বৈঠক হল। সেখানে তিনজনকে আসন্ন পঞ্চায়েতে বিজেপির প্রচারের মুখ করা হল।
সেই তিনজনের মধ্যে নেই মুকুল রায়ের নাম। বৈঠকে চূড়ান্ত হওয়া নামগুলি হল রাহুল সিনহা, দিলীপ ঘোষ ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। মুকুল রায়ের নাম থাকল ঠিকই, কিন্তু তা গুরুত্বের জায়গায় নয়। তালিকায় যাঁর স্থান সবার উপরে থাকবে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা ছিল, তিনি রইলেন বেশ পিছনে।
শুধু তাই নয়, যে পঞ্চায়েত যুদ্ধকে রাজ্য দখলের সেমিফাইনাল বলে মনে করছে দল, সেই ভোটের প্রচারে অনেকেই ব্রাত্য রয়ে গেলেন। ব্রাত্য রয়ে গেলেন বাবুল সুপ্রিয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও শমীক ভট্টাচার্য, রীতেশ তিওয়ারিদের মতো নেতারা। এক্ষত্রে বাবুলকে নিয়ে সে অর্থে কোনও মতভেদ নেই। বাবুলের উরপর মন্ত্রিত্বের চাপ রয়েছে, তার উপর তাঁর নির্বাচনী ক্ষেত্রে উন্নয়নের গুরুদায়িত্ব রয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্য ও রীতেশ তিওয়ারিদের কেন ব্রাত্য করে রাখা হবে। তবে কি রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্য বিজেপির দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে। সম্প্রতি রূপা গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য বিজেপির নিষেধ সত্ত্বেও নিজের মতো কর্মসূচিতে যাচ্ছেন। রাজ্য বিজেপি নেতাদের থোড়াই কেয়ার মনোভাব দেখাচ্ছেন, তাই তাঁকে দল ব্রাত্য করে রাখছে? কিন্তু শমীক ঘোষ বা রীতেশ তিওয়ারিরা কেন ব্রাত্য? শমীকের মতো বাগ্মী ও রীতেশের মতো লড়াকু নেতা দলের সম্পদ বলে মনে করা হত কিছুদিন আগেও। তাঁরা কেন বাতিলের খাতায়, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আসন্ন উপনির্বাচনগুলিতে মুকুল রায়ের উপর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। স্বভাবতই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, পর্যবেক্ষক, লোকসভা কেন্দ্রের পালকদের নিয়ে বৈঠকে মুকুল রায়কেই মুখ করা হবে এমন মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশদের মতো কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনে যা ঘোষণা হল তাতে রাজ্য বিজেপিতেও যে ফাটল ক্রমশ বড় হচ্ছে, তা প্রকট হয়ে গেল।
রাহুল সিনহাকে গুরুত্ব দেওয়া হলেও অনেকে বাতিলের খাতায় পড়ে গেলেন, দলের একাংশ মনে করছে, এই সময়ে তাঁদের দরকার ছিল। মুকুলের প্রতি আস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল দলের অন্দরে। নাকি দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের চাপেই মুকুলকে'সাইড'করে রাখলেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়রা, সে প্রশ্নও প্রকট হল।