বিজেপিতে বিভাজন স্পষ্ট, মমতা-সখ্যে দলের মন্ত্রীদেরই ‘মর্যাদা’নেই রাজ্যে
রাজনাথের রাজ্য সফরের দিনেই গরহাজির বঙ্গ বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মুকুল রায়ও কার্যত এড়িয়ে গেলেন তাঁকে।
বিজেপিতে ফের স্পষ্ট হল বিভাজন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং 'মর্যাদা' পেলেন না নিজের দলের কাছেই। তাঁর রাজ্য সফরের দিনেই গরহাজির বঙ্গ বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মুকুল রায়ও কার্যত এড়িয়ে গেলেন রাজনাথকে। তবে কি নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করাতেই গোঁসা হল বঙ্গ বিজেপির নেতাদের? তা নিয়েই জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনাথ সিং থেকে শুরু করে অরুণ জেটলিদের সম্পর্ক এখনও বেশ সখ্যতার পর্যায়ে রয়েছে। এই দুই নেতাকে মমতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে সচরাচর দেখা যায় না। মমতায় নরম থাকার জেরেই তাঁরা কেউ রাজ্যে আসুন, চান না বঙ্গ বিজেপির নেতারা। তাই এবার রাজ্যে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজনাথ, তা মেনে নিতে পারেননি রাজ্য নেতারা।
সেই কারণেই বিজেপি নেত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে পাঠিয়েই দায় সারল রাজ্য বিজেপি। আর ব্যক্তিগতভাবে রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। সেই কারণেই রাজনাথের বাংলা সফরে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়দের অনুপস্থিতি খুব বড় বেশি চোখে পড়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মমতার সঙ্গে সখ্যতার প্রশ্নেই রাজনাথ সিং, অরুণ জেটলির মতো নেতারা বাংলায় আসুন, চায় না রাজ্য বিজেপি। এই মর্মে বছর খানেক আগে কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে একটি চিঠিও লিখেছিলেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। সেখানে স্পষ্ট করেই উল্লেখ করা হয়েছিল দলীয় কর্মসূচিতে ওইসব মন্ত্রীদের যেন রাজ্যে পাঠানো না হয়।
এবার বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে, প্রতিবেশী অসমে বিজেপি সরকার। সেখানে না গিয়ে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বৈঠক করতে কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং নবান্নে এলেন? নাবান্নেই কেন পাঁচ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হল? অন্য কোনও রাজ্যেও তো এই বৈঠকের আয়োজন করা যেতে পারত। রাজ্য বিজেপি মনে করে, রাজনাথ সিং-অরুণ জেটলির সঙ্গে সু-সম্পর্কের জেরে তাঁরা কোনও সময়ের মমতা প্রসঙ্গে কড়া অবস্থান নেন না। ফলে তাঁরা রাজ্যে এলে মমতা বিরোধিতা বাধাপ্রাপ্ত হয়।
এ প্রসঙ্গে বিজেপির একাংশের অভিমত, বিধানসভা ভোটের আগে রাজনাথ প্রচারে এসে মমতা সম্বন্ধে নরম অবস্থান নিয়েছিলেন। কোথাও মমতাকে আক্রমণ করেননি। অরুণ জেটলি আবার দু-বছর আগে বিশ্ববঙ্গ সম্মেলনে এসে মমতার সরকারের প্রশস্তি গেয়েছিলেন। এসবই বিজেপির অস্বস্তির কারণ। সেই কারণেই এবার রাজনাথ সিংয়ের বঙ্গ সফরকে এড়িয়ে গেলেন বিজেপি নেতারা, মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।