বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ির দুর্গাপ্রতিমা সবচেয়ে আলাদা, রীতিও একেবারে ভিন্ন, জানুন সেই গল্প
এই দুর্গাপুজোর সাথে জড়িয়ে আছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নাম। এই দুর্গা পুজার বলিতে অবশ্যই লাগে দুটো কালো পাঁঠা।
এই দুর্গাপুজোর সাথে জড়িয়ে রয়েছে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নাম। এই দুর্গা পুজার বলিতে অবশ্যই লাগে দুটো কালো পাঁঠা। এই দুর্গা 'রাইবাঘিনী দুর্গা' বলেও পরিচিত। তবে এই দুর্গা প্রতিমা অন্য সব প্রতিমার চেয়ে আলাদা। কালো কষ্টিপাথরের মূর্তি। এর দুই হাত। ভয়াল দর্শন মুখ। বড় চোখ। বড় বড় দাঁত বেড়িয়ে আছে। এই রকম দুর্গা প্রতিমা পুজা হচ্ছে ২৫০ বছরের বেশি সময় ধরে। এই পুজা হচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই পুরসভার কাছাড়িবাড়ি এলাকায়।
আড়াইশো বছরের পুরনো পুজো
যে বাড়িতে এই পুজা হয় সেটা ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ি। ভট্টাচার্য পরিবারের এই বাড়ির মেয়ে দিনময়ী দেবীকে বিয়ে করেছিলেন বিদ্যাসাগর। বিদ্যাসাগরের বাড়ি বা জন্মস্থান এখান থেকে মাত্র দশ কিলোমিটার দূরে বীরসিংহ গ্রামে। এই বছর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের দুই শততম জন্মদিন। বিয়ের পর এই বাড়িতে এসে এমন দুর্গা প্রতিমা দেখে চমকে উঠেছিলেন তিনি। তবে অনেক চেষ্টা করেও এই দুর্গা প্রতিমা এমন কেন তার কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।
পুজো ঘিরে গল্প
তবে, স্থানীয় মানুষদের বিশ্বাস, এই এলাকায় এক সময় কলেরা, মড়ক ভয়াবহ আকার ধারণ করে এবং অনেক মানুষ মারা যায়। ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্যরা ছিলেন পুরোহিত। তারা এই দুর্গা প্রতিমা গড়ে পুজা করেন এবং তার পর মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠেন। দেবীর এমন ভয়াল রূপ দেখে ওই রোগ, মড়ক পালিয়ে যায় । তাই এমন রূপ এই দুর্গা প্রতিমার।
কেন এমন মূর্তি
এই পরিবারের সদস্য গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, এমন মূর্তি কেন তা আমাদের জানা নেই। তবে পূর্ব পুরুষদের করে যাওয়া নিয়ম অনুযায়ী আজও এই দুর্গা প্রতিমা পুজো হয়। এই মূর্তি পাথরের। তাই বিসর্জন দেওয়া হয় না। আর নবমীর রাতে বলি হয়। সেই বলিতে দুটো কুচকুচে কালো পাঁঠা অবশ্যই লাগে। আর পরিবারের সদস্য সকলেই সেই সময় উপস্থিত থাকে"। পরিবারের অনেকেই বাইরে থাকলেও পুজোয় সবাই চলে আসেন।
পুজোর দিন গুনছেন সকলে
গৌতম ভট্টাচার্যের দাদুর মেয়ে দিনময়ী দেবীকে বিয়ে করেছিলেন বিদ্যাসাগর। তিনি ও পুজোর সময় এই বাড়িতে আসেন বলে জানা গিয়েছে। এই বছর বিদ্যাসাগর মহাশয়ের দুই শততম জন্মদিন। তাই বিশেষ অনুষ্ঠান হবে বীরসিংহ গ্রামে। অনুষ্ঠান হবে অন্য জায়গাতেও। আর তার দিন কয়েক পরেই দুর্গা পুজো। এবার পুজোয় তাই একটু বেশি ভিড় হবে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের শ্বশুরবাড়ি র দুর্গাপুজোতে বলে মনে করছেন অনেকেই।
[আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমের শুরুতেই সরকারি কর্মীদের এলটিসি-তে কোপ মমতা সরকারের]