ঝাঁপ ফেলল দুই কারখানা, বেকার ৭৫০ কর্মী
হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ার জে এন মুখোপাধ্যায় রোডের অ্যালুমিনিয়াম কারখানাটি হঠাৎই 'সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক'-এর নোটিশ ঝোলায় গতকাল। কারখানার মালিক শ্রীপ্রকাশ ঝুনঝুনওয়ালার দাবি, কয়েকশো কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণে। তার পরও শ্রমিকরা উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করছে না। রাজ্য সরকারের কাছে নালিশ জানানো সত্ত্বেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিটু নেতা পঞ্চানন মান্না বলেন, "আমরা তো বলেছি, ভুল বোঝাবুঝি হলে আলোচনায় বসতে চাই। উনি তার তোয়াক্কা না করেই কারখানা বন্ধ করে দিলেন।" আইএনএটিটিইসি-র তরফে অরুণবরণ নন্দন বলেন, "মালিক মিথ্যে কথা বলছেন। এত দিন কম বেতনে দশ থেকে বারো ঘণ্টা কাজ করানো হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করায় কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হল।"
পাশাপাশি, হুগলী জেলার ভদ্রেশ্বরে ঝাঁপ ফেলেছে লগন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস জুট মিলের যিনি মালিক, সেই সঞ্জয় কাজোরিয়া লগন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডেরও কর্তা বটে। তিনি বলেন, "চট শিল্পে যে যন্ত্রপাতি লাগে, তা বানানো হত এখানে। কিন্তু এখন চট শিল্পে সঙ্কট চলছে। বাজার চাঙ্গা না হলে কারখানা চালানো সম্ভব নয়।" এই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে সিটু সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক পুরুষোত্তম প্রামাণিক বলেন, "বাজার মন্দা থাকার কথা একটা অজুহাত। উনি কোনও মাসেই আমাদের বেতন সময়ে দিতেন না। এর বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার হয়েছিলাম। তাই আমাদের জব্দ করতে কারখানা বন্ধ করা হল।" তিনি বলেন, ৪০০ জন কর্মী এর ফলে বেকার হয়ে পড়লেন।
প্রসঙ্গত, এই দু'টি কারখানা বন্ধ হওয়ায় নেতিবাচক বার্তা গেল শিল্প মহলে। কিছুদিন আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছে জেপস এবং হিন্দুস্তান মোটরস। তার পর নর্থব্রুক জুট মিলে ম্যানেজারকে পিটিয়ে মারার ঘটনা ঘটেছে। ঢক্কানিনাদ সত্ত্বেও ভবিষ্যতে আর কেউ শিল্প গড়তে আসবে কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।