সুপার চিফ মিনিস্টার হওয়ার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল! প্রতিবাদে বিরোধী ঐক্য সংসদে
বিরোধীরা একযোগে অভিযোগ করলেন, রাজ্যপাল সুপার চিফ মিনিস্টার হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাজ্যপাল কখনও সুপার চিফ মিনিস্টার হতে পারেন না।
রাজ্য প্রশাসনের কাজে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠল। রাজ্যপালের এই কাজ সংবিধানবিরোধী বলে দাবি করে বিরোধীরা একযোগে অভিযোগ করলেন, রাজ্যপাল সুপার চিফ মিনিস্টার হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু রাজ্যপাল কখনও সুপার চিফ মিনিস্টার হতে পারেন না। অথচ আমাদের রাজ্যপাল সেই চেষ্টাই করছেন। তিনি প্রশাসনের কাজে অহেতুক নাক গলাচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: মমতার প্রশাসনের কাজে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে সংঘাত চরমে! প্রতিবাদে উত্তাল রাজ্যসভা]
তৃণমূল সাংসদ দীনশ ত্রিবেদী বলেন, রাজ্যপাল আমাদের সাংবিধানিক প্রধান। সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তাঁকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করি। এই পদকে শ্রদ্ধা করে সবাই। আর এই পদ যিনি অলংকৃত করছেন, তাঁকেও এই পদের মর্যাদা রক্ষা করে শ্রদ্ধা আদায় করে নিতে হবে সবার। রাজ্যপালের এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে তাঁর সমালোচনা করতে হয়।
এদিন প্রশাসনের কাজে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে একযোগে সরব হলেন কংগ্রেস-তৃণমূলের সাংসদরা। শাসকের বিরুদ্ধে বিরোধীদের এই সম্মিলিত প্রতিবাদে সামিল সিপিএম-সিপিআইসহ অন্যান্য বিরোধীরাও। সংসদে ফের ঐক্যের ছবি ধরা পড়ল। আর এই ছবি শাসক বিজেপিকে নতুন করে অস্বস্তি দেবে। কারণ বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। তার আগে বিভিন্ন ইস্যুকে পিছু হটছে কেন্দ্রের শাসক দল।
রাজ্যপালের প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ নিয়ে আলোচনার দাবিতে রাজ্যসভা মুলতবি করে দেওয়ার পর বিরোধী দলের সমস্ত সাংসদরা একজোট হয়ে বৈঠক করেন। তাঁরা সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেন, কোনওমতেই প্রতিবাদের রাস্তা থেকে পিছু হটবেন না তাঁরা। যতক্ষণ না এই বিষয়ে আলোচনার অনুমতি দেওয়া না হবে, সংসদে তাঁদের বলতে না দেওয়া হবে, ততক্ষণ প্রতিবাদ চলবে।
রাজ্যসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, 'বিরোধীরা বলতে গেলেই রাজ্যসভা মুলতবি করে দেওয়া হয়। এই ধারা সমানে চলছে। এবার আর তাঁরা পিছু হটবেন না।' তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, 'এই সরকার নানা উপায়ে রাজ্য সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করছে। যে রাজ্যে অবিজেপি সরকার, সেই রাজ্যেই বিজেপি এমন ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করছে।'
তিনি বলেন, 'এর বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিবাদ দরকার। সেই প্রতিবাদের জন্য বিরোধীরা সবাই এক হতে পেরেছি। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদও।' বিরোধীদের বৈঠকে সমাজবাদী পার্টির সাসংদ বলেন, 'আমরা শুধু বিল পাস করতে সংসদে আসি না। আমরা আম-আদমির আওয়াজ ওঠাতে সংসদে আসি। কিন্তু সেই আওয়াজেরই কণ্ঠরোধ করে দেওয়া হচ্ছে।'
ঘটনার সূত্রপাত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে রাজ্যপালের একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সরাসরি জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি লিখে কেন্দ্রীয় প্রকল্প কীভাব রূপায়িত হচ্ছে জানতে চান। এই চিঠি নিয়েই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে।
[আরও পড়ুন: নতুন আশার পাহাড় সফরে নয়া সমীকরণের খোঁজে মমতা, মোদী-হটানোর 'ব্লু-প্রিন্ট' তৈরি]