বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের রাজ্য সরকারের চাপের মুখে পড়তে হয়, অভিযোগ রাজ্যপালের
কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরোক্ষভাবে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে ভারতীয় জনতা পার্টির মুখপত্রের মতো কাজ করার অভিযোগ করেন। শুক্রবার নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে পাল্টা কটাক্ষের সুরে বলেন, “রাজ্য প্রশাসন তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কখনও বলেনি যে তিনি তার অধিকারের বাইরে কাজ করছেন।” অন্যদিকে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের পাশাপাশি একটি সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয় কাণ্ডের পর রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ও আইনকানুন প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের সঙ্গে একাধিক বাগবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা যায় রাজ্যপালকে। অভিযোগ ওঠে 'অতি সক্রিয়তার’।
এদিকে শুক্রবার মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা সৈয়দ নুরুল হাসান কলেজের রৌপ্যজয়ন্তী উদযাপনে অংশ নিতে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। দায়িত্ব গ্রহণের রাজ্যের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলির উপর তার বেশ কিছু পর্যবেক্ষণও এদিন তুলে ধরেন তিনি। এদিন তিনি বলেন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার দরুন বিশ্বভারতী বাদ দিয়ে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিজস্ব স্বাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের চাপের মুখোমুখি হতে হয়।
এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে ধনকর বলেন, “ আচার্য হিসাবে আমি লক্ষ্য করেছি অনেক ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উপাচার্যরা সরকারের চাপের মুখোমুখি হন। অনেক সময় চাপ আসে আচর্যের তরফ থেকেও। আমি তাদের স্পষ্টতই জানিয়েছি আমাদের দেশের আইনেই সরকার এবং আচার্যের সীমাবদ্ধতার উল্লেখ রয়েছে। প্রথমে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে মন্দির হিসাবে বিবেচনা করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সেখানে শান্তিতে পড়াশোনা করতে যেতে পারে। আমি সেই চেষ্টাই করে যাব।”
রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আচার্যকে আগে বুঝতে হবে যে কারও কতটা কর্তৃত্ব দেখানো উচিত। সংবিধান আমাদের প্রচুর শক্তি দিয়েছে কিন্তু এর প্রয়োগ কোন ক্ষেত্রে কতটা করব তা আমাদের মাথায় রাখা উচিত। রাজ্যপালকে আগে তার সীমাবদ্ধতাটা বুঝতে হবে। অন্যথায় কেউই তার কথা গ্রহণ করবে না।”