প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা বাবাকে খুনের অভিযোগ, মাকে জেল বের করে সিপিএমকে নিশানা প্রাক্তন বাম বিধায়কের
ছেলেবেলায় সেভাবে প্রভাবশালী বামনেতা বাবার (father) স্নেহ পাননি আর মা (mother) জেলে যাওয়ায় শুনতে হয়েছে নানা কথা। শেষ পর্যন্ত ২৭ বছর জেলে থাকার পরে মা তালাত সুলতানাকে (Talat Sultana) মুক্ত করে বাড়িতে এনেছেন, প্রাক্তন ফরও
ছেলেবেলায় সেভাবে প্রভাবশালী বামনেতা বাবার (father) স্নেহ পাননি আর মা (mother) জেলে যাওয়ায় শুনতে হয়েছে নানা কথা। শেষ পর্যন্ত ২৭ বছর জেলে থাকার পরে মা তালাত সুলতানাকে (Talat Sultana) মুক্ত করে বাড়িতে এনেছেন, প্রাক্তন ফরওয়ার্ডব্লক (forward block) বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ali imran ramz)। তবে পরিবারের এই অবস্থার পিছনে একটা সময়ে রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা তাঁরই দলের বড় সহযোগী সিপিআইএমকেই (CPIM) কার্যত দায়ী করেছেন তিনি।
১৯৯৪-এ খুনের ঘটনা
রাজ্যে বাম শাসন তখন মধ্য গগণে। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। সেই সময় এক শীতের রাতে কিড স্ট্রিটের বিধায়ক আবাসে গোয়ালপোখরের তৎকালীন বিধায়ক রমজান আলির খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে আদালতের নির্দেশে দোষী সাব্যস্ত হন রমজান আলি অর্থাৎ আলি ইমরান রমজের মা তালাত সুলতানা এবং রমজান আলির প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক নুরুল ইসলাম। দু-জনের অবৈধ সম্পর্কের জেরে খুনের ঘটনা বলে অভিযোগ ছিল। তবে তালাত সুলতানা ছাড়া পেলেও, নুরুল ইসলাম এখনও জেলেই রয়েছেন।
সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ
সেই সময়ের ঘটনা সম্পর্কে আলি ইমরান রমজ সংবাদ মাধ্যমের কাছে সিপিএম-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, তৎকালীন সময়ে তাঁর বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেছএন ১৯৯৪ সালে পুরভোটের সময় তাঁর বাবার ওপরে হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় অভিযুক্ত ছিল স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। সেই সময় বাবার মাথায় আঘাত লাগে আর তার দুমাসের মধ্যে বাবাকে খুন হতে হয়। গোয়ালপোখরের প্রাক্তন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, কলকাতা থেকে চিকিৎসা করে ইসলামপুরে মিটিং করার জন্য ফেরার কথা ছিল, কিন্তু তার আগেই তিনি খুন হয়ে যান। সেই মিটিং করলে তৎকালীন সময়ে সিপিএম-এর অনেক অসুবিধা হত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রভাব খাটিয়ে মামলা ঘোরানোর অভিযোগ
ভিক্টর ওরফে আলি ইমরান রমজ অভিযোগ করেছেন, সেই সময় তাঁর বাবার ওপরে হামলা নিয়ে তদন্ত সেরকম হয়নি প্রশাসনিক প্রভাবের কারণে। এছাড়াও পারিবারিক সমস্যার মামলাও চাপ দিয়েই ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। যদিও বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
পরিবার এখন শক্ত ভিতের ওপরে
দুহাজার এগারো থেকে পরপর দুবার উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়া থেকে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন আলি ইমরান রমজ । বিধানসভায় বক্তা হিসেবে নজরও কাড়েন। কিন্তু ২০২১-এর নির্বাচনে অন্যসব বাম প্রার্থীর মতো তিনিও হেরে যান। তবে বাবা খুন হওয়ার পর মাও জেলে। সেই সময়ে কাকা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হাফিজ আলি সইরানি তাঁদেরকে সাহায্য করেছিলেন বলেই জানিয়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে দুই বোনের একজন শিক্ষিকা অন্যজন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। সুপ্রিমকোর্টের একটি রায়ের ওপরে ভিত্তি করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত মাকে তাঁরা কারা-মুক্তি করেন। ২৭ বছর পরে মায়ের স্পর্শ পাওয়া আলি ইমরান রমজ আক্ষেপ রাজনীতি করতে গেলে যে ত্যাগের প্রয়োজন হয় তার উদাহরণ তাঁদের পরিবার।