শুভেন্দু অধিকারীর তীব্র কটাক্ষ 'হিন্দু' মমতাকে! ভবানীপুরে বইছে চোরা স্রোত, দাবি বিরোধী দলনেতার
শুভেন্দু অধিকারীর তীব্র কটাক্ষ 'হিন্দু' মমতাকে! ভবানীপুরে বইছে চোরা স্রোত, দাবি বিরোধী দলনেতার
ভবানীপুরে (Bhabanipur) নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে তৃণমূলের (Trinamool Congress) কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা আদায়ের দাবি তুললেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এদিন তিনি বলেন, দেশের ইতিহাসেই রয়েছে পাবলিকের কাছে রিজেক্টেড কেউ মুখ্যমন্ত্রী হন না। এদিন তিনি রোম সফর বাতিল প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) হিন্দু (Hindu) দাবিকেই তীব্র কটাক্ষ করেন।
ভবানীপুরের উপনির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে
প্রচারের শেষ দিনেও শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, ভবানীপুরের উপনির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, কোনও সাংসদ কিংবা বিধায়ক মারা গেলে কিংবা দল পরিবর্তন করলে উপনির্বাচনের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিধায়ক পদ ছাড়লেও তিনি সুস্থও আছেন এবং তৃণমূলেই আছেন।
তৃণমূলের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা আদায়ের দাবি
ভবানীপুরে নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। এব্যাপারে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, হাইকোর্টের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, কোনও একটি আসনে উপনির্বাচন করতে গেলে দেশের করদাতাদের ৩ কোটি টাকা খরচ হয়। এব্যাপারে তিনি বলেন, উচ্চ আদালত কী করবে তিনি জানেন না, তবে তৃণমূলের কাছ থেকে যেন ৫ কোটি টাকা আদায় করা হয়।
নিজের বুথেই পিছিয়ে
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ২০১৪ সালে ভবানীপুর কেন্দ্রে এগিয়েছিলেন তথাগত রায়। আর ২০১৯-এ যে কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট দেন, সেই মিত্র ইনস্টিটিউশনের বুথে ৪৮৫ ভোটে হেরেছিলেন। এত জনপ্রিয়তা, তাহলে এটা কী করে সম্ভব, প্রশ্ন করেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, সঙ্গে রয়েছে পুলিশ, গুণ্ডা আর দুধেল গাই।
ভবানীপুরে চোরা স্রোত
শুভেন্দু অধিকারী এদিন দাবি করেন ভবানীপুরে চোরাস্রোত বইছে। ৬৫ শতাংশের ওপরে ভোট করান। শুভেন্দু এদিন বলেন, অনেকেই তাঁকে বলেছেন, স্লিপ নেবেন তৃণমূলের আর ভোট পদ্মে। ভবানীপুরে ভোটারদের ভয় দেখাতেই এদিন দিলীপ ঘোষের ওপরে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন ৩০ সেপ্টেম্বর এখানে চুপচাপ পদ্মে ছাপ হবে। অত্যাচারী মমতাকে ভোট, নাকি প্রিয়ঙ্কাকে, তা এখানকার ভোটারদেরই ঠিক করতে হবে। ভবানীপুরকে ফের একবার নন্দীগ্রাম করতে আহ্বান জানান তিনি।
পাবলিকের কাছে রিজেক্টেড মুখ্যমন্ত্রী হন না
শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন ১৯৯৬ সালে কেরলে অচ্যুতানন্দন ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। তাঁকে এলডিএফ আর মুখ্যমন্ত্রী করেনি। ৪ বছরে আগে হিমাচল প্রদেশে প্রেম কুমার ধুমল দুটি আসনে হেরে যাওয়ার পরেই বিজেপি জয়ী হয়। কিন্তু তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি। শুভেন্দু অধিকারী এপ্রসঙ্গে বলেন পাবলিকের কাছে রিজেক্টেড লোক কখনও মুখ্যমন্ত্রী হন না। কিন্তু প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির প্রধান মুখ্যসচিবকে দিয়ে লিখিয়ে নিলেন সাংবিধানিক সংকট হবে। এব্যাপারে শুভেন্দু অধিকারী প্রশ্ন করেন, তাহলে মন্ত্রী থাকা অমিত মিত্র এবং শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়ের কী হবে। এবার তো তাঁদের মন্ত্রীত্ব ছাড়তে হবে, বলেছেন শুভেন্দু। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কটাক্ষ করে বলেন, ইনি নিজের আর ভাইপোর স্বার্থ ছাড়া কারও কথা বোঝেন না।
প্রসঙ্গ 'হিন্দু' মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, তিনি হিন্দু বলে, তাঁকে রোমে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এর জবাব দিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, সবার মনে থাকার কথা মহরমের মিছিল যাওয়ার জন্য দুর্গাপুজোর শোভাযাত্রায় বাধা তৈরি করেছিল এই প্রশাসন। শুভেন্দু অধিকারী এদিন অভিযোগ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরস্বতীর মন্ত্র, চণ্ডীপাঠ ভুল করেন, কিন্তু কলমাটা ঠিক পড়েন। আত তিনিই ভবানীপুরের প্রচার শুরু করেন যোলো আনা মসজিদ দিয়ে।
এদিন প্রচার পর্বে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল জিতলে, তাঁকে তিনি বিরোধী দলনেতার আসন ছেড়ে দেবেন। বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বওকেও জানাবেন বলে জানিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিকে বলছেন, তিনি ত্যাগের প্রতীক অন্যদিকে তিনি বলছেন, ভোট না দিলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকতে পারবেন না। সেই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, প্রিয়ঙ্কা ভবানীপুর থেকে জিতলে তিনি বিরোধী দলনেতার আসনটা ছেড়ে দেবেন। পদের প্রতি নিজের কোনও মোহ নেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নিজের তফাত বোঝাতেই এদিন এই মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী।