রিজওয়ানুরকে ভুলেছেন মমতা, সেই জ্ঞানবন্ত সিংয়ের ফের পদোন্নতি
কলকাতা, ১ জানুয়ারি: রিজওয়ানুর রহমানকে মনে আছে? বড়লোকের মেয়ের সঙ্গে ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ায় যাঁকে জীবন দিয়ে খেসারত দিতে হয়েছিল? আর মনে আছে কি জ্ঞানবন্ত সিংকে? কলকাতা পুলিশের অন্যতম সেই অফিসার, যাঁর ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে ছিল না! এ বার সেই জ্ঞানবন্ত সিংকেই আইজি (ইন্সপেক্টর জেনারেল) পদে উন্নীত করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
শিল্পপতি অশোক টোডির মেয়ে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে ভালোবাসার বাঁধনে বাঁধা পড়েছিলেন তিলজলার গরিব ঘরের যুবক রিজওয়ানুর রহমান। প্রথমে ভয় দেখানো, তার পর একদিন রহস্যজনকভাবে মারা যান রিজওয়ানুর। রেললাইনের ধারে তাঁর দেহ পাওয়া যায়। সেটা ২০০৭ সাল। কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার প্রসূন মুখোপাধ্যায়, ডিসি (সদর) জ্ঞানবন্ত সিং এবং আরও তিনজন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন, ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল। এর জেরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসারদের তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেন। শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত।
আশ্চর্যের ব্যাপার হল, এই রিজওয়ানুর ইস্যুকে পুঁজি করে আন্দোলন শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিলজলার বাড়িতে গিয়ে রিজের মায়ের পাশে দাঁড়ানো, তৃণমূলের টিকিটে তাঁর দাদা রুকবানুর রহমানকে বিধায়ক করা, সব কিছুই করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অথচ তাঁর আমলে জ্ঞানবন্তের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি বিভাগীয় তদন্তে দাঁড়ি টেনে দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় প্রথমে তাঁকে ডিআইজি (মুর্শিদাবাদ) পদে উন্নীত করা হয়েছিল ২০১৪ সালের জুলাই মাসে। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে তিনি অবৈধভাবে নজরদারি চালাচ্ছেন, এমন অভিযোগও উঠেছিল। এ বার আরও একধাপ এগিয়ে জ্ঞানবন্ত সিংকে আইজি করল রাজ্য সরকার।
এ ঘটনায় মৃত রিজওয়ানুরের পরিবারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।