বুদ্ধের বিধি বাম, ফ্ল্যাটের মালিকানা দিচ্ছে না রাজ্য সরকার
এক সময় তাঁরই অঙ্গুলিহেলনে তটস্থ থাকত রাজ্য প্রশাসন। অথচ এখন টাকা-কাগজপত্তর দিয়েও বাড়ির মালিকানা পাচ্ছেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কবে পাবেন, ঠিক নেই। রাজ্য সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বললেও তাদের অভিপ্রায় নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বামফ্রন্ট জমানার শেষ দিকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, পাম অ্যাভিনিউতে যে ফ্ল্যাটে হাই-প্রোফাইল বাসিন্দারা থাকেন, তাদের মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। কারণ এগুলি সরকারি সম্পত্তি হওয়ায় তাঁরা ভাড়া দিয়ে থাকতেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ছাড়াও কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য পাম অ্যাভিনিউয়ের এই আবাসনের বাসিন্দা। সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, এই ফ্ল্যাটগুলির সংরক্ষণ বাবদ তারা আর অর্থ খরচ করতে রাজি নয়। ফ্ল্যাটের দাম বাবদ একটা টাকা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবাসন দফতরে জমা দিতে হবে। তা হলে, মালিকানা দিয়ে দেওয়া হবে। তাঁরা সেই টাকা জমাও দিয়েছিলেন।
কিন্তু রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পর গোটা ব্যাপারটা হিমঘরে চলে গিয়েছে। আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছেন, "আমরা ফ্ল্যাট বিক্রির ক্ষেত্রে আমরা-ওরা ভাগাভাগি করব না।" কিন্তু তাই যদি না হবে, তা হলে এখনও সিদ্ধান্ত নিতে এত দেরি করছে কেন রাজ্য সরকার? এর জবাবে প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রী গৌতম দেবের ওপর দোষের বোঝা চাপিয়ে দেন অরূপবাবু। বলেন, "ওঁর সময়ে কোনও পরিকল্পনা করা হয়নি। ঠাকুর রামকৃষ্ণের টাকা মাটি, মাটি টাকা বাণী অনুসরণ করে চলতেন গৌতমবাবু। শিল্পপতিদের পাইয়ে দিতেন, কিন্তু গরিব মানুষের কথা ভাবেননি।" কিন্তু এর সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ফ্ল্যাট হস্তান্তর না করার কী সম্পর্ক, সেটা বোঝা যায়নি।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও বিরক্ত কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি গতকাল বলেন, "আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। নতুন সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ্যে এলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব। কেন এই গড়িমসি, সেটাই বুঝতে পারছি না।"