
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ একাধিক প্রকল্পে বাড়ল বরাদ্দ, এক নজরে দেখে নিন বাজেটে কি পেলেন মহিলারা
বিধানসভায় হই–হট্টগোল, বিজেপির ওয়াক–আউটের মধ্যেই রাজ্য বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। রাজ্যের ইতিহাসে প্রথমবার বাজেট পেশ করলেন কোনও মহিলা অর্থমন্ত্রী। শুক্রবার বিজেপির বিক্ষোভের মধ্যেই ২০২২–২৩ সালের বাজেট পড়েন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। চন্দ্রিমার বাজেট ভাষণের মধ্যেই ওয়াক-আউট করে বিজেপি।

১৯ হাজার ২৩৮ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব
মহিলাদের জন্য যে বিশেষ কিছু অপেক্ষা করছে তা নিয়ে রাজ্যের মহিলারা আশাবাদী ছিলেন। নিরাশ করেননি অর্থমন্ত্রীও। রাজ্যের একাধিক সামাজিক সুরক্ষা ও উন্নয়ন খাতের পাশাপাশি নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণ খাতেও অর্থ বাড়ানো হয়েছে। এদিন অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিকাশ ও সমাজ কল্যাণ বিভাগের জন্য আগামী অর্থবর্ষে ১৯,২৩৮.২৭ কোটি টাকা ব্যয়বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নারী এবং শিশু কল্যান প্রকল্পে ১৭.৫ গুণ বরাদ্দ বাড়ল।

বাড়ল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বরাদ্দ
এছাড়াও ভোটের সময় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, দুয়ারে রেশনের মতো জনমোহিনী প্রকল্পগুলির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। তাই ক্ষমতায় ফেরার পরই রাজ্য বাজেটে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের বরাদ্দ একলাফে ১ কোটি করে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি বিধবা পেনশন খাতে বরাদ্দ বেড়ে ২৫০০ কোটি টাকা করা হয় বাজেটে। বিধানসভায় বাজেট পেশের সময় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেন, আগামী চার বছরে ১ কোটি ২০ লক্ষ কর্মসংস্থানের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। শুক্রবার নারী ও শিশু উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণ খাতের খতিয়ান তুলে ধরলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার
মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ২০২১ সালের অগাস্ট থেকে রাজ্যে চালু করা হয় 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার'। এই প্রকল্পের অধীনে তপশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলারা মাসে ১০০০ টাকা করে ও সাধারণ (জেনারেল) মহিলা মাসে ৫০০ টাকা করে পাবেন। চলতি অর্থবর্ষের অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে এই প্রকল্পে মহিলাদের নাম নথিভুক্ত করার কাজ শুরু হয়। গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ১.৬৪ কোটি আবেদনের মধ্যে ১.৫৩ কোটি আবেদন ছাড় পায় এবং এখনও পর্যন্ত ৩,৪৫৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।

শিশু ও মায়েদের পুষ্টি রাজ্যের উদ্যোগ
২০২১-২২ সালে 'অঙ্গনওয়াড়ি' প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের ৬ বছর বয়স পর্যন্ত ৭৩.৯১ লক্ষ শিশু এবং ১৫.৩৭ লক্ষ গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের জন্য প্রতিমাসে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাতে তাদের পুষ্টিকরণে কোনও সমস্যা না হয়।

শিশুদের থাকা ব্যবস্থা
রাজ্য সরকার বংলায় শিশুদের জন্য বহু কাজ করেছে। ২০২১-২২ সালে শিশু সুরক্ষা পরিষেবার অধীনে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩৮৫৮ জন শিশুকে ১৯টি সরকার পরিচালিত ও ৫২টি এনজিও পরিচালিত শৈশবাবাসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এগুলির মধ্যে ২১টি শৈশবাবাস বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট।

শিশুদের দত্তক নেওয়ায় উদ্যোগী রাজ্য
রাজ্যে শিশুদের দত্তক নেওয়া সংক্রান্ত কাজের জন্য ৩টি সরকারি ও ২১টি এনজিও পরিচালিত সংস্থা কাজ করছে। ২০২১-২২ সালে ২০৭ জন শিশু নতুন অভিভাবক পেয়েছে। এদের মধ্যে বিদেশেও বেশ কিছু শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে।

কন্যাশ্রী প্রকল্প
রাজ্য সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কন্যাশ্রী প্রকল্প এ বছর নবম বর্ষে পা দিল। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ৭৫ লক্ষ কিশোরী। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে ২২,৭৯,০০২ জন কন্যাকে বর্ষিক অনুদান বাবদ ১০০০ টাকা করে এবং ৫,২৫,৬৩২ জন কন্যাকে এককালীন অনুদান হিসাবে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

রূপশ্রী প্রকল্প
এই প্রকল্পের অধীনে ২০২১-২২ সালে ২.১১ লক্ষ বিবাহযোগ্য ও দুঃস্থ পরিবারের মেয়েদের জন্য বিয়ে উপলক্ষ্যে তাঁদের এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান বাবদ দেওয়া হয়।

বিধবা ভাতা
সামাজিক প্রকল্পের অধীনে বিধবা ভাতা ও বাধর্ক্য ভাতা প্রকল্পের আওতায় যথাক্রমে ৬,৮০,৫৪৬৪ জন ও ১৬,৮৯,৬৫৭ জন সুবিধাভোগীকে মাসিক ১০০০ টাকা হারে পেনশন প্রদান করা হয়েছে।
স্ট্যাম্প ডিউটিতে ২ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা! বাজেটে মানুষকে স্বস্তি দিয়ে আরও কি বললেন চন্দ্রিমা?