সারা বিশ্বের সামনে মডেল হবে সিঙ্গুর, জমি ফেরত অনুষ্ঠানে বললেন মমতা
সারা পৃথিবীতে সিঙ্গুর একটা মডেল হবে। সিঙ্গুরে তৈরি হবে কৃষকদের নামে মনুমেন্ট। বৃহস্পতিবার ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক কৃষকদের হাতে জমি ফিরিয়ে দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একথা ঘোষণা করলেন।
সিঙ্গুর, ২০ অক্টোবর : সারা পৃথিবীতে সিঙ্গুর একটা মডেল হবে। সিঙ্গুরে তৈরি হবে কৃষকদের নামে মনুমেন্ট। বৃহস্পতিবার ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক কৃষকদের হাতে জমি ফিরিয়ে দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সগর্বে ঘোষণা করলেন সেই কথা। সেই সঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, কেউ অধিকার দেয় না, অধিকায় কেড়ে নিতে হয়। বিশ্বাস হারালে চলে না, লড়াই করতে হয়। সেই লড়াইয়ের পথেই সিঙ্গুরে ঐতিহাসিক জয় হয়েছে। স্বপ্ন পূরণ হয়েছে সিঙ্গুরবাসীর।
এদিনই কৃষকদের হাতে জমির দখল তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে গোপালনগর মৌজা থেকে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছিল, সেই গোপালনগর থেকেই তিনি শুরু করলেন জমি ফেরানোর কাজ। জমিতে নেমে নিজের হাতে ছড়িয়ে দিলেন বীজ। এদিন এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের সাক্ষী থাকল সিঙ্গুর।
সময়ের
আগেই
হল
প্রতিশ্রুতিপূরণ।
সেই
খুশির
জোয়ারে
ভেসে
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঙ্গুরের
মঞ্চ
থেকে
বলে
উঠলেন,
অবেশেষে
প্রকল্প
এলাকায়
শুরু
হল
চাষ,
ফলবে
ফসলও।
যতদিন
না
ফসল
ঠিকঠাক
ফলছে,
ততদিন
কৃষকদের
পাশে
থাকবে
তার
সরকার।
সব
রকম
সাহায্য
করা
হবে।
সিঙ্গুরের
জমির
দখল
কৃষকের
হাতে
তুলে
দিতে
পেরে
খুশি
মুখ্যমন্ত্রী
এদিন
দীর্ঘ
সিঙ্গুর
আন্দোলনের
কথা
তুলে
ধরলেন।
তুলে
ধরলেন
বিডিও
অফিসে
ধর্না-বিক্ষোভের
কথা।
লড়াইয়ের
বার্তা
দিয়ে
তখনই
তিনি
বললেন,
''অধিকার
কেউ
কাউকে
দেয়
না,
অধিকার
কেড়ে
নিতে
হয়।''
সিঙ্গুরের
জমি
দ্রুত
কৃষকদের
হাতে
ফিরিয়ে
দেওয়ার
জন্য
রাজ্য
প্রশাসনের
ভূয়সী
প্রশংসা
করেন
মুখ্যমন্ত্রী।
প্রক্রিয়াকে
তরান্বিত
করতে
বিশেষ
ভূমিকা
নেওয়ায়
পার্থ
চট্টোপাধ্যায়ের
আলাদা
করে
প্রশংসা
করেন
তিনি।
সিঙ্গুরবাসীকে
ধন্যবাদ
দিয়ে
তিনি
বলেন,
আপনারা
যে
আন্দোলনের
পথ
থেকে
সরে
আসেননি,
তার
জন্য
ধন্যবাদ।
আপনাদের
আন্দোলনের
জন্যই
দশ
বছরের
স্বপ্ন
পূরণ
হল।
আপনাদের
আন্দোলন
সারা
বিশ্বে
আদর্শ
হয়ে
থাকবে।
সিঙ্গুর
মডেল
নামেই
তাঁর
খ্যাতি
হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর আগে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষামন্ত্রী তথা পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। সুব্রতবাবু সিঙ্গুর আন্দোলনকে তেভাগা আন্দোলনের থেকেও এগিয়ে রাখেন। এদিন মোট ১০৩ একর জমি ২২১৬ জন কৃষকের হাতে এই জমির দখল তুলে দেওয়া হল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ জন কৃষকের হাতে আজ নিজেই জমি তুলে দেন। তিনি বলেন, ৯৯৭.১১ একর জমির মধ্যে ৯৩১ একরকে ইতিমধ্যেই চাষযোগ্য করে তোলা হয়েছে।
মোট ১০, ৪৩৬ জন কৃষকের হাতে এই জমি তুলে দেওয়া হবে ১০ নভেম্বরের মধ্যে। বাকি ৬৫ একরও সঠিক সময়ের মধ্যেই চাষযোগ্য করে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে তিনি ঘোষণা করেন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে। এছাড়া কৃষকদের হাতে বেগুন গাছের চারা এবং সর্ষের বীজ তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সিঙ্গুরে পৌঁছেই সভামঞ্চে মূল অনুষ্ঠান শুরুর আগেই সরাসরি কৃষিজমিতে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী।
কৃষিজমিতে নেমে নিজের হাতে জমিতে শস্যের বীজ ছড়িয়ে দেন। তাঁর হাত ধরেই ১০ বছর পরে ফের চাষের সূচনা হয় সিঙ্গুরের জমিতে। সিঙ্গুরে কৃষকদের মধ্যে জমির পড়চা এবং ক্ষতিপূরণের চেক আগেই বিলি হয়েছে। জমির কাগজ কৃষকরা আগেই পেয়েছিলেন। এদিন থেকেই তাঁরা জমির দখল পেতে শুরু করলেন।