ঘাটালে ভিড় সাইবেরিয়ার পরিযায়ীদের, পাখি বাঁচাতে বন দফতরের ভরসা ছাত্ররা
বুলবুল, ময়না, টিয়াদের কলতান তো ছিলই, শীতের মরশুমে বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের হরিসিংপুরে সাইবেরিয়া উড়ে আসছে পরিযায়ী পাখির দলও।
পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ ডিসেম্বর : বুলবুল, ময়না, টিয়াদের কলতান তো ছিলই, শীতের মরশুমে বেশ কয়েক বছর ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের হরিসিংপুরে সাইবেরিয়া উড়ে আসছে পরিযায়ী পাখির দলও। ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি ভিড় জমায়, কিচির মিচির শব্দে ভরিয়ে তোলে এলাকার পরিবেশ। সকাল হলেই কত না গান শুনিয়ে যায় তারা।
পাশাপাশি দুটি বড় জলাশয় ঘাটালের হরিসিংপুরে। তবে সাঁতরাগাছি পাখিরালয়ের মতো পরিষ্কার নয় জলাশয় দু'টি। তবু গত পাঁচ বছর ধরে শীতের মরশুমে আসে পরিযায়ী পাখি। আর পাখিপ্রেমী মানুষ ভিড় জমান। বিপদও বাড়ে পখিদের। কেননা পাখিরালয়ের পরিকাঠামো নেই। নেই বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা। কিন্তু বাঁচাতে তো হবে ওই পরিযায়ী পাখিদের? বন দফতরের ভরসা তাই এলাকার পড়ুয়ারাই।
বন দফতর কর্মীরা পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখেছেন পরিযায়ী পাখিরা মোটেই নিরাপদ নয় এখানে। পাখি দেখতে বিলের সামনে প্রতিদিনই ভিড় জমে। দর্শনার্থীরা পাখিগুলিকে বিরক্ত করে। খড়গপুর বন বিভাগের পক্ষ থেকে এর আগে পরিযায়ীদের বিরক্ত না করার আবেদন জানিয়ে বিলের পাশে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছিল। তাতে লাভ হয়নি বিশেষ। এই জলাশয়ের পাশে তৈরি হয়েছে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। বর্তমান শিক্ষাবর্ষ থেকেই পঠন পাঠন শুরু হচ্ছে। এখানকার পড়ুয়াদেরই পড়ুয়াদেরই পরিযায়ী পাখিদের দেখভালের দায়িত্ব দিতে উৎসাহী বন দফতর।
খড়গপুরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, ঘাটালের হরিসিংহপুরের জলাশয়ে কয়েক বছর ধরে যে প্রচুর পরিমাণ পাখি আসছে। তাই ওই এলাকা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমরা জলাশয়টি পরিষ্কার করে সাঁতরাগাছি ঝিলের মতো করতে চাই। তিনিই ইচ্ছা প্রকাশ করেন, জলাশয়ের পাশে যে নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ তৈরি হয়েছে, তার ছাত্রদের কাজে লাগাতে চান এই পাখিদের রক্ষার জন্য।
ডিএফও বলেন, আমরা এলাকার মানুষকে সচেতন করব পাখিগুলিকে দেখভাল করার জন্য. কেউ বিরক্ত করলে বাধা দেওয়ার জন্য। ঠিক তেমনই ছাত্রছাত্রীদের কাছে আমরা আবেদন করব, যাতে তাঁরা সাইবেরিয়া থেকে আসা এই পাখিগুলির রক্ষার দায়িত্ব নেন।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রসূন সামন্ত, বাদল মাজি, মোনালিসা প্রামাণিক, প্রতিমা সামন্তরা রা বলেন, প্রথমে অল্প অল্প পাখি আসত। এখন দেখছি প্রতি বছরই হাজার হাজার পাখি আসছে এই জলাশয়ে। ফলে অনেকেই পাখি দেখতে আসছেন। পাখি দেখতে এসে লোকজন ঢিল ছোড়ে। অনেকে গুলতি দিয়ে পাখি মারারও চেষ্টা করে। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।
কিন্তু কেন ছাত্রছাত্রীদেরই কাজে লাগাতে চাইছেন? ডিএফও বলেন, ছাত্ররা অনেক বেশি সচেতন। তাঁরা বোঝালে মানুষ তা ভেবে দেখেন। তাই আমরা ওই এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়ে পাখিগুলিকে রক্ষা করার আবেদন জানাব। সবাইকে অনুরোধ করব পাখিদের যেন বিরক্ত না করা হয়।