পুরভোটে মিলিয়ে গেল লাল, জনমানসে কোন বার্তা পেল আলিমুদ্দিন?
সাত পুরসভার ভোটের ফলাফলের পর কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল সিপিএম তথা বামফ্রন্ট। পাহাড়ের চার পুরসভা ও সমতলের তিন পুরসভার কোথাও রইলেন না সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি।
সাত পুরসভার ভোটের ফলাফলের পর কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল সিপিএম তথা বামফ্রন্ট। পাহাড়ের চার পুরসভা ও সমতলের তিন পুরসভার কোথাও রইল না সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি। ডোমকলে এক কংগ্রেস সমর্থিত বামপ্রার্থী জিতলেও, জয়ের পর তিনি নাম লেখালেন তৃণমূলে। ফলে সাত পুরসভার কোথাও সিপিএম তথা বামেদের প্রতিনিধিত্ব করার মতো কেউ রইল না। এই নির্বাচনী ফলাফল বাম রাজনীতির করুণ চিত্রটা আরও প্রকট করে দিয়ে গেল।
কোচবিহার ও কাঁথি দক্ষিণের উপনির্বাচন দিয়ে শুরু। ক্রমশই পিছোতে শুরু করেছিল সিপিএম। প্রথমে বিজেপি-র কাছে দ্বিতীয় স্থান খোয়ানো। তারপর সাত পুরসভা নির্বাচনের ফলাফলে একেবারে মুছে যাওয়া। সাতটি পুরসভায় একজন বামফ্রন্টের প্রতিনিধিও থাকবে না। এটা শুধু অস্তিত্ব সঙ্কটের প্রশ্ন নয়, কার্যত বাম রাজনীতির করুণ পরিণতিই প্রকাশ করছে। এই চরম সঙ্কট থেকে কী করে উত্তরণ হবে বামফ্রন্টের, তার রাস্তা খুঁজতেই ব্যস্ত নেতৃত্ব।
পাহাড়ের চার পুরসভার কথা ছেড়ে দিলেও, সমতলে সিপিএম লড়াই দেবে- এমনটা আশা করেছিল রাজনৈতিক মহল। ডোমকলের মতো জায়গায়- যেখানে এতদিন বাম ও কংগ্রেস মূলত লড়াই করে এসেছে, তারা এবার হাত মিলিয়েছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের দখলদরি রুখতে এবার জোট গড়ে তারা তৃণমূলকে আটকে দেবে এটাই মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু ভোটের ফলাফল বের হতেই উল্টো চিত্র।
প্রায় সব আসনেই জয়ী তৃণমূল। মাত্র দু'টি আসনে জয়লাভ করেছে কংগ্রেস। আর একটি আসনে জয়ী হয় বামেরা। কিন্তু গণনা কেন্দ্র থেকে বেরিয়েই ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী রফিকুল ইসলাম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী আসাদুল ইসলাম তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা জানান। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের ফলে আর কোনও বাম প্রতিনিথি রইল নাম সদ্য ভোটের ফল বেরনো সাত পুরসভায়।
রায়গঞ্জের মতো জেলাতেও খাতা খুলতে পারেনি সিপিএম। যে জেলায় দীপা দাশমুন্সিকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম, সেই জেলাতেই এবার পুরভোটে ভরাডুবি সিপিএমের। কংগ্রেসের গড় বলেই পরিচিত ওই এলাকা। এবার তৃণমূলের ঝড়ে কংগ্রেস দু'টি আসনে জয় পেয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে বিজেপি যেখানে খাতা খুলতে সমর্থ হল, সেখানে সিপিএম একেবারে ধরাশায়ী।
একইভাবে পূজালি পুরসভাতেও তিন নম্বরে নেমে গিয়েছে সিপিএম তথা বামেরা। একটি আসনেও জিততে পারেনি বামপ্রার্থীরা। বিজেপি দু'টি আসনে জয়লাভ করে। বাকি আসনগুলিতে দ্বিতীয় স্থানে উত্থান হয় তাদেরই। একেবারে তৃতীয়স্থানে নেমে যেতে হয়েছে বামেদের।