দুর্যোগ কমলেও উৎকন্ঠা বাড়ছে, অসহযোগিতার অভিযোগে রাজীব-রোষে ডিভিসি
ডিভিসি-র দিকে আঙুল তুলে সেচমন্ত্রী জানান, পরিকাঠামো থাকলেও ডিভিসি জল বেঁধে না রেখে ছেড়ে দিচ্ছে। ফলে কোথাও কোথাও পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে আরও।
দুর্যোগ কমলেও উৎকণ্ঠা কাটছে না রাজ্যবাসীর। ডিভিসির ছাড়া জলে নতুন করে প্লাবিত রাজ্যের বহু এলাকা। রাজ্যকে না জানিয়েই ডিভিসি জল ছেড়ে দেওয়ায় সংকট বাড়ছে বলে এবার অভিযোগ করলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরে সুর মিলিয়েই তিনি ডিভিসি-র বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ আনলেন।
দুর্যোগের মাত্রা কমেছে। মঙ্গলবার মুষলধারে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে না। তাই জল নামতে শুরু করেছে বহু এলাকায়। আবার অনেক জায়গায় জল বাড়ছেও। ডিভিসি জল ছাড়ায় টইটম্বুর নদী বাঁধ উপচে জল ঢুকছে গ্রামে। বাঁকুড়ায় গন্ধেশ্বরী নদীর জল উপচে ডুবে গিয়েছে সতীঘাট সেতু। ফলে নতুন করে একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জলমগ্ন হয়েছে বাঁকুড়া শহরও।
উল্টোদিকে বীরভূমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। জল নেমে যাওয়ায় সিউড়ি-কাটোয়া রোডে যান চলাচল শুরু হয়েছে। লাঘাট ব্রিজ খুলে দেওয়া হয়েছে। জল কমেছে ময়ূরাক্ষী, কোপাই, দ্বারকা নদীর। তবে শিলাবতী, কংসাবতী, গন্ধেশ্বরী নদীর জল বাড়ছে। জল বাড়ছে দামোদর, মুণ্ডেশ্বরীরও। এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাইয়ে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ক্ষীরপাইয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘাটালের গ্রামও নতুন করে জলমগ্ন হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ডিভিসি-র দিকে আঙুল তুলেছেন সেচমন্ত্রী। তিনি জানান, পরিকাঠামো থাকলেও ডিভিসি জল বেঁধে না রেখে ছেড়ে দিচ্ছে। ফলে কোথাও কোথাও পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে আরও। এদিন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ নবান্নে চিঠি দিয়ে জানায়, বাঁধের জল ধারণ ক্ষমতা উর্ধ্বসীমায় পৌঁছে গিয়েছে। তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন জল ছাড়তে। উল্লেখ্য, এদিন ফের ৪৮ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। জল ছাড়া হয়েছে মাইথন বাঁধ থেকেও। ফলে বর্ধমানেও নতুন করে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, টানা বৃষ্টির জেরে সমস্ত এলাকা এখন জলের তলায়। তার উপর সোমবার থেকেই জল ছাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন জলাধার। সেই জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়েছে মঙ্গলবার। ঝাড়গ্রাম নিজেরা বাঁচার জন্য ইচ্ছামতো জল ছেড়ে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় ডিভিসিও যদি নাগাড়ে জল ছাড়তে থাকে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ডিভিসিকে বারবার অনুরোধ করেছিলাম। এখনও অনুরোধ করে যাচ্ছি। কিন্তু কোনওরকম সহযোগিতা করছে না ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। আমরা ডিভিসি কর্তৃপক্ষের ব্যবহারে অতন্ত দুঃখিত। তাঁর দাবি, জলাধারে এখনও পাঁচ থেকে সাত ফুট জায়গা রয়েছে। কিন্তু খামখেয়ালিপনা করছে ডিভিসি। বন্যা প্রতিরোধে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।