প্রশান্ত কিশোর প্রমাদ গুণছেন মমতার দলের ‘কীর্তি’ দেখে, ‘থ’ হয়ে গেলেন এমনকী অভিষেকও
প্রশান্ত কিশোর প্রমাদ গুণছেন মমতার দলের ‘কীর্তি’ দেখে, ‘থ’ হয়ে গেলেন অভিষেকও
আর সময় কোথায়! ২০২১-এর অ্যাসিড টেস্ট তো দুয়ারে কড়া নাড়ছে। এখনও তৃণমূল কংগ্রেসে সমানে চলছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ২০১৯-এ তৃণমূলকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিল, ২০২১-এর আগেও সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। এবং প্রশান্ত কিশোর তা দেখে প্রমাদ গুণতে শুরু করলেন। এই অবস্থায় তৃণমূলের হ্যাটট্রিক নিশ্চিত তিনি করবেন কীভাবে!
তৃণমূল নেতৃত্বের কীর্তি দেখে অবাক পিকে-অভিষেক
২০১৯-এর লোসকভা নির্বাচনে তৃণমূল উত্তরবঙ্গে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। কোনও আসনেই তৃণমূল জয়লাভ করতে পারেনি। ড্যাংডেঙিয়ে আটটির মধ্যে সাতটিতে জিতে যায় বিজেপি। আর বাকি আসনটি জেতে কংগ্রেস। তাই এবার বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে চোখ দিয়েছে তৃণমূল। প্রশান্ত কিশোর ও অভিষেক উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের কীর্তি দেখে অবাক।
১০টি আসনে প্রভাব বাড়াতে গিয়ে সংঘাত দেখলেন পিকে
উত্তরবঙ্গে মোট ৫৪টি বিধানসভা কেন্দ্র। তার মধ্যে ২০১৬-র বিধানসভায় ২৫টি আসনে জয়যুক্ত হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি পেয়েছিল মাত্র দুটি আসন। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের নিরীখে সেখানে বিজেপি এগিয়ে ৩৮টিতে। তৃণমূল এগিয়ে মাত্র ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রে। এই অবস্থায় প্রশান্ত কিশোর চাইছেন আরও অন্তত ১০টি আসনে প্রভাব বৃদ্ধি করতে।
একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব প্রশান্ত কিশোর-অভিষেকের সামনেই
তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে উত্তরবঙ্গ সফলে গিয়ে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর প্রথমেই জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কার কোথায় কাজ করতে কী সমস্যা হচ্ছে, তা খুলে বলুন। কোথায় কী ত্রুটিবিচ্যুতি তা তিনি নির্ণয় করতে গিয়েই দেখলেন কোচবিহারের নেতারা একে অপরের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন।
এখানেই যদি এমন করেন, তাহলে জেলায় কী করেন? প্রশ্ন
জেলার নেতাদের এই বাগবিতণ্ডা দেখে হতবাক অভিষেক ও পিকে। এরপরই মোক্ষম বাণটা ছাড়েন প্রশান্ত কিশোর। বলেন, আপনারা এখানেই যদি এমন করেন, তাহলে জেলায় গিয়ে কী করেন, তা বুঝতে আমার অসুবিধা হচ্ছে না। শিলিগুড়িতে এই বৈঠক চলাকালীন প্রশান্ত কিশোর ও অভিষেকের ধমকানিতে তারপর থমকে যান সবাই।
কোচবিহার জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বৈঠকে দ্বন্দ্ব চরমে
প্রশান্ত কিশোর ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে প্রায় সমস্ত নেতা-নেত্রীরাই এসেছিলেন বৈঠকে। শুধু অসুস্থতার জন্য আসেননি প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আর গরহাজির ছিলেন বিদ্রোহী বিধায়ক মিহির গোস্বামী। পার্থপ্রতিম রায় মহামিছিল শেষ করে পৌঁছন সভাকক্ষে। তারপর আলোচনা শুরু হতেই দেখা যায় তৃণমূলে দু-পক্ষের লড়াই।
দু-পক্ষের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা
কোচবিহারে একদিকে জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় ও বিধায়ক উদয়ন গুহ। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, হিতেন বর্মন, মিহির গোস্বামী, অর্ঘরায় প্রধান। এই লড়াই কলকাতার বৈঠকেই দেখেছিলেন প্রশান্ত কিশোররা। এরপর শিলিগুড়িতে বসে দু-পক্ষের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দিতেই ফের বিপত্তি।
তড়িঘড়ি দ্বন্দ্ব মিটিয়ে বৈঠকের রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ
তৃণমূলের এই জটিল পরিস্থিতিতে জেলা চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে জেলা সভাপতির উপস্থিতিতে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকের বার্তা দেন প্রশান্ত কিশোর এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকের তারিখ ও সময়ও ঠিক করে দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি দ্বন্দ্ব মিটিয়ে এই বৈঠকের রিপোর্ট দিতে বলা হয় জেলা নেতৃত্বকে।
মুকুল-দিলীপরা গৌণ, ভোট-জয়ে বিজেপি যাঁর উপর নির্ভরশীল বাংলা কি তাঁকে মানবে