অশান্ত ভাঙড়, নিজের এলাকায় ঢুকতেই পারলেন না রেজ্জাক
জমি আন্দোলন শুরু হয়েছে ভাঙড়ে। অভিযোগ, জোর করে জমি দখল করে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প করা হচ্ছে। এই অবস্থায় নিজের বিধানসভা ক্ষেত্রে ঢুকতেই পারলেন না রাজ্যের মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ১৭ জানুয়ারি : জমি আন্দোলন শুরু হয়েছে ভাঙড়ে। অভিযোগ, জোর করে জমি দখল করে পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প করা হচ্ছে। এই অবস্থায় নিজের বিধানসভা ক্ষেত্রে ঢুকতেই পারলেন না রাজ্যের মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা। গ্রামবাসীদের বাধায় তাঁকে ফিরে যেতে হল। পার্টি অফিস পর্যন্তই থমকে গেল বিধায়কের দৌড়।[পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা বিদ্যুৎমন্ত্রীর, তবু চলছে লাগাতার অবরোধ]
পাওয়ার গ্রিড প্রকল্প পুরোপুরি বন্ধ করে জোর করে কেড়ে নেওয়া জমি ফেরতের দাবিতে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ উত্তরোত্তর বাড়ছিলই। সেখানে দুই জমি আন্দোলনের নেতাকে গ্রেফতারি আগুনে ঘি ঢালার কাজ করে। তারপর মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে। পুলিশের সঙ্গে জনতার খণ্ডযুদ্ধ হয় দফায় দফায়।[নন্দীগ্রামের ধাঁচে জমি আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ ভাঙড়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যাচ্ছেন রেজ্জাক!]
এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে নির্দেশ পাঠানো হয় রেজ্জাক মোল্লাকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেজ্জাক মোল্লাকে ভাঙড়ে যেতে বলেন। সেইমতো রেজ্জাক মোল্লা ভাঙড়ের উদ্দেশ্য রওনা দেন। তখনই প্রশ্ন ওঠে, কেন তাঁর এলাকায় এমন ধরনের জমি আন্দোলন চলছে, যা ক্রমশই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে, তবু তিনি কেন একবারও এলাকায় যাননি।[মুখ্যমন্ত্রী বা বিদ্যুৎমন্ত্রীকে এসে পাওয়ার গ্রিড বন্ধের আশ্বাস দিতে হবে, নতুবা আন্দোলন চলবে]
রেজ্জাক মোল্লা স্পষ্ট করে দেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাননি ঘটনাস্থলে যাওয়ার। এখন পেয়েছেন, এবার যাবেন। কিন্তু তিনি নিজের এলাকাতেই ঢুকতে পারলেন না। এর আগে এই বার্তা এলাকায় পৌঁছনোর পর, গ্রামবাসীরা জানিয়ে দেন, তাঁরা রেজ্জার মোল্লাকে গ্রামে প্রবেশ করতেই দেবেন না। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, গতকাল যখন রাতভর এলাকায় পুলিশ অত্যাচার চালাল তখন কোথায় ছিলেন তিনি।[গ্রামবাসীদের প্রতিরোধে শেষপর্যন্ত পিছু হটল পুলিশ, গুলিবিদ্ধ গ্রামবাসী, রক্তাক্ত পুলিশও]
তাঁদের জমি জোর করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তবু বিধায়ক হিসেবে তিনি কোনও দায়িত্বই নেননি। বারবার তাঁর কাছে দরবার করেও কোনও সুরাহা মেলেনি। এদিকে আরাবুলের এলাকা ভাঙড় থেকে নির্বাচিত হয়েই রেজ্জাক এখন রাজ্যের মন্ত্রী। কিন্তু ভাঙড়ে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা যে তলানিতে, তা এদিনের ঘটনায় প্রমাণিত হয়ে গেল।[জোর করে জমি অধিগ্রহণ নয়, প্রয়োজনে পাওয়ার গ্রিড সরানো হবে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
রেজ্জাক মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পেয়ে বলেন, আমি বাহিনীতে নয়, আলোচনায় বিশ্বাসী। কিন্তু এলাকার বিধায়ক হয়েও তিনি প্রবেশ করতে পারলেন না এলাকায়, তবে আলোচনায় বসবেন কী করে। কী করেই বা তিনি সমাধান সূত্র বের করবেন কিংবা মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে দেবেন আন্দোলনকারীদের কাছে। আন্দোলনকারীদের দাবি তাই মুখ্যমন্ত্রী কিংবা বিদ্যুৎমন্ত্রীকেই আসতে হবে এলাকায়।