পুলিশ হেফাজতে থাকা ব্যক্তি ফের গ্রেফতার! পাড়ুই থানার ওসিকে অপসারণের নির্দেশ কোর্টের
বীরভূমের মাকড়া গ্রামে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী আলি জিন্নাকে। বুধবার তাঁকে সিউড়ি আদালতে তোলা হয়। পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় ওই ব্যক্তিকে। এর পর সেই আলি জিন্নাকেই বৃহস্পতিবার অন্য একটি মামলায় ফের আদালতে তোলে পাড়ুই থানার পুলিশ। বলা হয়, বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গরমিলের বিষয়টি বিচারক ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়কে বলেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী। সব দেখে বিচারক বেজায় চটে যান। গ্রেফতার হওয়ার পর যে ব্যক্তি পুলিশ হেফাজতে রইলেন, তাঁকেই আবার কীভাবে গ্রেফতার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
গতকালই বিচারক ডেকে পাঠিয়েছিলেন বীরভূমের এসপি অলোক রাজোরিয়া, পাড়ুই থানার ওসি কার্তিকমোহন ঘোষ ও অ্যারেস্টিং অফিসার ধ্রুবজ্যোতি দত্তকে। ওসি নিজে গতকাল এজলাসে এসে ক্ষমা চান। বলেন, "ভুল হয়ে গিয়েছে স্যার।" কিন্তু বিচারক ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় পাল্টা ধমকে বলেন, "এটা ভুল নয়। মিথ্যা। টু প্লাস টু কেউ যদি সিক্স লেখে, সেটা হল ভুল। আর টু প্লাস টু কেউ শেক্সপিয়র লিখলে সেটাকে বলে জেনেশুনে মিথ্যা বলা। আপনি সেটাই করেছেন। আপনারা ল অ্যান্ড অর্ডারের কথা বলেন। অথচ শুধু অর্ডার মানেন, ল নয়।"
এ দিন শুনানি শুরু হওয়ার পরই সরকারি কৌঁসুলি বলেন, এসপি সাহেবের মাতৃবিয়োগ হয়েছে। তাই তিনি আসতে পারছেন না। আদালত এই আর্জি মঞ্জুর করে ডেকে পাঠায় ওসি এবং অ্যারেস্টিং অফিসারকে। বিচারক বলেন, "আপনারা আইনটাই জানেন না। পুলিশ হেফাজতে থাকা একজনকে দু'বার গ্রেফতার দেখানো যায় না।"
পাড়ুই থানার ওসি মুখ নীচু করে দাঁড়িয়ে সব কিছু হজম করেন। এর পরই বিচারক ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় এসপি অফিসকে নির্দেশ দেন, পাড়ুই থানার ওসি-কে সরিয়ে দেওয়ার। পাশাপাশি, অ্যারেস্টিং অফিসার ধ্রুবজ্যোতি দত্তকে সাসপেন্ড করে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচারক বলেন, তিনি গোটা ব্যাপারটা কলকাতা হাই কোর্টকে লিখিতভাবে জানাবেন। হাই কোর্টই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
অসমর্থিত সূত্রে খবর, সিউড়ি আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে আপিল করবে রাজ্য সরকার। যদিও সরকারের তরফে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি স্পষ্ট করে।