দলের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে চলল গুলি, জ্বলছে বাসন্তী
এলাকায় আদি তৃণমূল ও নব্য তৃণমূলের দ্বন্দ্ব চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এলাকায় কারা রাজ করবে, তা নিয়েই দ্বন্দ্বের জেরে তৃণমূল বনাম তৃণমূল লড়াই।
শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ থোড়াই কেয়ার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ চলছেই। দলের এক যুব নেতাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হামলা ও তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল সোমবার রাতে। তৃণমূল যুবনেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূলেরই ব্লক সভাপতির ছেলে। মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন আবুল অনুগামীরা।
সোমবার রাত থেকেই জ্বলছে বাসন্তীর শিমুলতলা গ্রাম। তৃণমূল যুবনেতা আবুল হাসান মোল্লাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। প্রথমে তাঁর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। কোনওরকমে পালানোর চেষ্টা করলে, তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলি লাগে তৃণমূল যুবনেতার ঘাড়ে।
গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ক্যানিং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর তাঁরে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার পরই বাসন্তী থানার পুলিশ তদন্ত নামে। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে অশান্তির পারদ চড়তে থাকে নতুন করে।
আবুল হাসানকে খুনের চেষ্টার পিছনে তৃণমূলেরই একটি গোষ্ঠী রয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগের তির বাসন্তী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আবদুল মান্নান গাজির ছেলে নুর ইলাহি গাজির দিকে। অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি তোলেন আবুল অনুগামীরা। পুলিশ এই ঘটনায় নুর ইলাহি গাজিকে আটক করেছে। এই ষড়যন্ত্রে তাঁর সঙ্গে মামা ইকবাল মণ্ডলও ছিল বলে অভিযোগ।
পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী আবুল হাসান মোল্লা। আর এলাকায় নার্সিংহোম রয়েছে নুর ইলাহি গাজির। তিনি তাঁর মামা ইকবালকে নিয়ে আবুলের বাড়িতে যান সোমবার রাত ১২টা নাগাদ। নার্সিংহোমের জন্য কিছু ওষুধ লাগবে বলে তাঁকে ডেকে নিয়ে যান নুর। এরপর বাড়ির অদূরেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। দু'রাউন্ড গুলি চলে। একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, অপরটি ডান কাঁধে লাগে আবুলের। এরপর পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
গুলির আওয়াজ শুনে ছুটে আসেন বাড়ির লোকজন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনা এলাকায় আদি তৃণমূল ও নব্য তৃণমূলের দ্বন্দ্বের ফল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এলাকায় কারা রাজ করবে, তা নিয়েই দ্বন্দ্বের জেরে এবার গুলি চলল। এদিন আবার অভিযুক্তের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দলে ফের আগুন জ্বলতে শুরু করেছে বাসন্তীতে।