পুজোর আগেই কি মুকুল বিসর্জন! পার্থর বার্তায় স্পষ্ট ‘চাণক্যে’র বিজেপি-যোগ
তৃণমূল কংগ্রেসে মুকুল রায় যে সত্যিই কোণঠাসা, তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাতেই তা সুস্পষ্ট হল এবার।
মুকুল রায়ের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের ফাটল আরও চওড়া হল। এবার সরাসরি মুকুল রায়কে বার্তা দিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফের একবার তাঁকে সাবধান করে দিলেন বিজেপি-র সঙ্গ নিয়ে। মুকুল রায়ের গতিবিধি আতস কাঁচের তলায় রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করে পার্থবাবুর সাফ জবাব, 'সীমা ছাড়ালে দল বাধ্য হবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।'
কিছুদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেস ও মুকুল রায়ের সম্পর্ক নিয়ে নানা জলঘোলা শুরু হয়েছে। দিনের দিন মুকুল রায়ের দলবদল নিয়ে জল্পনার পারদ চড়ছে। কখনও দল তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছে। কখনও দলে তাঁকে ব্রাত্য করার পাল্টাও দিয়েছেন মুকুল।
তবে একটা কথাও তিনি বলেননি তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। কিন্তু কথায় না বললেও কাজে বুঝিয়ে দিয়েছেন, দল তাঁকে মান্যতা না দিলেও তাঁর কিছু যায় আসে না। এমনকী শেষমেশ তিনি জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তাও স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেন। এরপরই জল্পনার পারদ আরও চড়ে যায়। তাহলে তৃণমূলে মুকুল বিসর্জন কি হচ্ছে পুজোর আগেই!
আপাতত সেই সম্ভাবনা না থাকলেও দলে মুকুল রায় যে সত্যিই কোণঠাসা, তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাতেই তা সুস্পষ্ট হল এবার। তিনি সরাসরি মুকুল রায়ের নাম করে জানালেন, 'সীমানা ছাড়ালে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে দল। মুকুলবাবুর একজন সিনিয়ন লিডার। তাঁকে দলনেত্রী আগেই সতর্ক করেছেন বিজেপিকে নিয়ে।'
কিন্তু তিনি বিজেপি সংসর্গ ত্যাগ করেননি। বরং বিজেপি সঙ্গ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিত্য যোগাযোগ রেখে চলেছেন বিজেপির কেনও না কোনও নেতার সঙ্গে। সেই প্রসঙ্গেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় ফের একবার সতর্ক করে দিয়েছেন তাঁকে। তিনি বলেন, বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে কেউ আমাদের রাজনৈতিক বন্ধু হতে পারেন না।
পার্থবাবুর এই বার্তার পর তৃণমূলে মুকুল রায়ের অবস্থান অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে গেল। এই অবস্থায় কী করবেন মুকুল রায়! তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবেন কি না, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোনও ইঙ্গিত দেননি রাজ্যসভার সাংসদ। পাশাপাশি মুকুল রায় দল ছাড়লে ছেলে শুভ্রাংশু-র অবস্থানই বা কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। সারদাকাণ্ডে মুকুল রায়ের নাম জড়ানোর পর শুভ্রাংশুকে মধ্যস্থ করেই ফাটল জোড়া লেগেছিল। এবার কী আর সেই সম্ভাবনা জিইয়ে রইল, রাজনৈতিক মহলে জোর তরজা শুরু হয়েছে তা নিয়েও।