তৃণমূলে মুকুলের স্থান এখন কোথায়, মমতার নাম টেনে এনে বুঝিয়ে দিলেন পার্থ
মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা উড়িয়ে দিলেও ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরে কেউ নয় বলে কী বোঝাতে চাইলেন পার্থ ।
মুকুল রায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে ক্রমেই জল্পনা বাড়ছে রাজ্য-রাজনীতিতে। মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিতে পা বাড়িয়ে রয়েছেন, বিজেপি রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য রীতিমত দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। তাহলে কি মুকুল রায় সত্যিই বিজেপিতে যাচ্ছেন, এটাই এখন যে কোনও রাজনৈতিক আলোচনার মূল আলোচ্য বিষয়।
[আরও পড়ুন: মুকুল পা বাড়িয়ে বিজেপিতেই! দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে ফের জল্পনা]
মুকুল নিজে এসব জল্পনাকে অবশ্য ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন। সোমবার মুকুলের বিজেপিতে যাওয়ার প্রসঙ্গে মুখ খোলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এই জল্পনাকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পার্থবাবুও। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরের কথাতেই রহস্য আরও ঘণীভূত হয়েছে। পার্থ বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাই শেষ কথা, তাঁর কোনও বিকল্প নেই। রাজ্যবাসীও একমাত্র তাঁর ওপরই ভরসা রাখেন। তৃণমূলের মহাসচিবের এই মন্তব্য কীসের প্রেক্ষিতে তাই এখন ভাবিয়ে তুলেছে রাজনীতিবিদদের।
মুকুল রায়ের সঙ্গে দলের একটা দুরত্ব যে রয়েছে তা নতুন করে বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চেও তা চাক্ষুস করেছেন রাজ্যের তৃণমূলকর্মীরা। মাইক হাতে না নিয়ে মঞ্চের এক কোনে বসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। ত্রিপুরার ৬ তৃণমূল বিধায়কের বিজেপিতে যাওয়ার সিদ্ধান্তের পরই ত্রিপুরার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মুকুলকে। ২৮ জুলাই উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েও মুকুল দাবি করেছেন, দলের কাজে নয়, সাংসদ হিসেবেই সেখানে গিয়েছেন তিনি। এমনকী কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে মুকুলের একাধিক সাক্ষাতের খবরও রটে। অবশ্য মুকুল সেই খবরকে ভুয়ো বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য শুনে অনেকেরই মনে হয়েছে, আগুন না থাকলে ধোঁয়া ওঠে কীভাবে। এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও সেই খবর উড়িয়ে দিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তাতেও ধোঁয়াশা কাটার বদলে আরও ঘণীভূত হয়েছে।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে! অবশেষে দলবদল নিয়ে মুখ খুললেন মুকুল রায় ]
নারদকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ডাক পড়েনি মুকুল রায়ের। সারদাকাণ্ডে সিবিআই-এর কাছে হাজিরার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। প্রায় বছরখানেক এভাবেই চলতে থাকে। এরইমধ্যে ফের জল্পনা শুরু হয় মুকুল রায় নাকি জাতীয়তাবাদী তৃণমূল কংগ্রেস নামে আলাদা একটি দল গড়ছেন। কিন্তু বছরখানেক পরে ফের মমতার সঙ্গে সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয় মুকুল রায়ের। তবে ভাঙা কাচ যেমন জোড়া লাগে না, তেমনই ঘরে ফিরলেও আগের জায়গা আর ফিরে পাননি একসময়ের মমতার সেকেন্ড ইন কমান্ড।