আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনায় উজবেক ও তাজিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাত এনএসএ ডোভালের
আফগানিস্তান নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনার আগে এনএসএ অজিত ডোভাল মঙ্গলবার তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। সন্ত্রাসবাদ ও আফগানিস্তানে মানবিক সংকট নিয়ে দিল্লি উদ্বিগ্ন।
আফগানিস্তান নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনার আগে এনএসএ অজিত ডোভাল মঙ্গলবার তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। সন্ত্রাসবাদ ও আফগানিস্তানে মানবিক সংকট নিয়ে দিল্লি উদ্বিগ্ন। তাই আফগানিস্তানের উন্নয়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে পৃথক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন অজিত ডোভাল।
ভারত বুধবার আফগানিস্তানে একটি এনএসএ বৈঠকে অংশ নিতে চলেছে। সেই বৈঠকে রাশিয়া, ইরান, চিন, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। তার আগে তাজিকিস্তানের নিরাপত্তা পরিষদের সচিব নসরুল্লো রহমতজন মাহমুদজোদার সঙ্গে বৈঠকে আফগানিস্তান সম্পর্কে বিশদ মত বিনিময় হয়।
সাম্প্রতিক অতীতে আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসী হুমকির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। তাজিকিস্তান পক্ষ থেকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয় বলে সূত্রের খবর। এই আলোচনায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের কথাও বলা হয়েছে। তাজিকিস্তানের সাথে বৈঠকে প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং সীমান্ত অবকাঠামো উন্নয়নের মতো সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে উজবেকিস্তানের নিরাপত্তা পরিষদের সচিব ভিক্টর মাখমুদভের সঙ্গে বৈঠকে আফগানিস্তান আবারও আলোচনার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু ছিল। উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে যে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে আফগানিস্তানের জনগণকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উভয় পক্ষই আফগানিস্তানের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আফগানিস্তানের প্রতিবেশীদের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছে।
ভারত ও উজবেকিস্তান আফগানিস্তানের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে অবশ্যই দেশে একটি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। বুধবার হতে চলা আফগানিস্তান নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনায় সাতটি দেশের এনএসএ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে বলে জানা গেছে।
আলোচনায় অংশ নিতে চলা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরান, রাশিয়া, উজবেকিস্তান, কাজাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান এবং কিরগিজস্তান। অংশগ্রহণকারী এনএসএরাও যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনায় বসতে চলা আটটি দেশের (ভারত সহ) কোনওটিই তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয় না বা বৈধ বলে মনে করে না। ভারত তা স্বীকার করে না বলেই আফগানিস্তানকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানায়নি।
আলোচনায় আফগানিস্তান এবং সীমান্তবর্তী এলাকার সন্ত্রাসবাদের পাশাপাশি উগ্রপন্থা ও চরমপন্থা নিয়েও আলোচনা হবে। আফগানিস্তানে রেখে যাওয়া সামরিক অস্ত্র থেকে উদ্ভূত হুমকির পাশাপাশি মাদক উৎপাদন ও পাচার নিয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোও উদ্বিগ্ন। এদিকে চিন বলেছে যে, সময়সূচি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে তারা সম্মেলনে যোগ দিতে অক্ষম। তারা বহুপাক্ষিক বা দ্বিপাক্ষিকভাবে আফগানিস্তান নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার জন্য দুয়ার খোলাই রেখেছে। উল্লেখ্য, পাকিস্তান এর আগে ভারতের ডাকা প্রতিবেশী দেশগুলির এনএসে-স্তরের বৈঠকের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে জানা গেছে।