এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যার চেষ্টা উত্তর দিনাজপুরে
এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যার চেষ্টা উত্তর দিনাজপুরে
এনআরসি আতঙ্কে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এক কৃষক। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার বিষ্ণুপুরে। ওই কৃষককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে অসুস্থ সইফুর রহমানের। তার ভোটার কার্ডে নাম ভুল থাকার কারণে খুবই চিন্তায় ছিলেন। কি করে তার নাম ঠিক করবেন সেই চিন্তাই তাকে গ্রাস করছিল। এনআরসি আতঙ্কে ভুগছিলেন বহু দিন ধরে। তিন মেয়ে এক ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে তার সংসার। এনআরসি হলে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে এই আতঙ্কে বিষ পান করে আত্মহত্যা চেষ্টা করেন।
উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ ব্লকের বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আশমানহাট গ্রামের বাসিন্দা সইফুর রহমান। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভোটার কার্ডে এক রেশন কার্ডে অন্য নাম থাকায় ঠিক করতে না পারায় এন আর সি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে তিনি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
সইফুর রহমান পরিবারের প্রধান ও একমাত্র উপার্জনকারী। বাবার এমন অবস্থায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে সে। এই বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে মেয়ে শবনম খাতুন। তিন মেয়ে এক ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে কৃষিকাজ করে দিনযাপন করেন। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের সিটিজেন অ্যামান্ডমেন্ড আইন ও এন আর সি নিয়ে চরম উদ্বেগে ছিলেন তিনি। তার নাম সইফুর রহমান কিন্তু তাঁর ভোটার কার্ডে নাম রয়েছে রহমান সইফুর। অনেক চেষ্টা করেও তাঁর কাগজপত্র ঠিক করতে পারেননি তিনি। কেন্দ্র সরকারের এন আর সি চালু হলে তাদেরকে এদেশের ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যেতে হবে এই আশঙ্কায় ছিলেন তিনি। সইফুর তাঁর পরিবারের কাছেও এই আশঙ্কার কথা বলেন। পরিবার তাঁকে আশ্বস্ত করলেও তিনি এতটাই এন আর সি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে মানসিক অবসাদে ভুগছিল।
আজ সকালে সইফুর বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বাড়ি থেকে বিষের শিশি নিয়ে নিজের জমিতে গিয়ে সেই বিষ পান করেন সইফুর। তাঁর ছেলে বাবাকে এই অবস্থায় দেখতে পেয়ে ছুটে এসে খবর দেয় মা-কে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত সইফুরকে উদ্ধার করে প্রথমে হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসে। হেমতাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে গুরুতর অসুস্থ সইফুর রহমানকে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অসুস্থ সইফুর রহমান জানান, আমার কাগজপত্র ঠিক নেই। এন আর সি হলে কি হবে এই আতঙ্কে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সইফুর রহমানের মেয়ে শবনম জানান, আমরা বাবাকে বুঝিয়েছিলাম এন আর সি হলেও তাদের কোনও সমস্যা হবেনা। কিন্তু বাবা আতঙ্কগ্রস্ত হয়েই এই কাজ করেছে।