ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতি, গোষ্ঠী সংক্রমণের চেন ভাঙতে বাংলায় একাধিক বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত
বাংলায় ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘন্টায় ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, ভোট বাংলায় করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটে গিয়েছে। আর সেই কারনেওই কার্যত প্রত্যেকদিন এত পরিমাণ মানুষ
বাংলায় ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে করোনা সংক্রমণ। গত ২৪ ঘন্টায় ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, ভোট বাংলায় করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটে গিয়েছে। আর সেই কারনেওই কার্যত প্রত্যেকদিন এত পরিমাণ মানুষ করোনাতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন আগেই নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইতিমধ্যে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত। গোষ্ঠী সংক্রমণের চেন ভাঙতে একাধিক বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত।
চেন ভাঙতে একাধিক বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত
গবেষণা বলছে বাজার থেকে সবথেকে বেশি করোনার সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সেদিকে নজর রেখেই এবার বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েনশন। মূলত যেভাবে কলকাতায় করোনার সংক্রমণ ঘটছে তাতে উদ্বিগ্ন সংগঠন। আর সেই কারনেই গোষ্ঠী সংক্রমণের চেন ভাঙতে কলকাতার একাধিক বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ওই সংগঠনের। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে শহরের বেশ কয়েকটি প্রধান অ-অপরিহার্য পণ্য বাজার বন্ধ রাখা হবে। টানা চারদিন বন্ধ থাকবে এই বাজার। তবে এর ফলে বাজারের চাহিদায় কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই জানাচ্ছেন সংগঠনের আধিকারিকরা।
কোন কোন বাজার বন্ধ রাখা হবে
বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে চাঁদনী চক, প্রিন্সেপ স্ট্রিট, এজরা স্ট্রিট, ম্যাংগো লেন ও ক্যানিং স্ট্রিটের বাজার। যদিও তালিকাতে আরও বেশ কয়েকটি বাজার রয়েছে। সেগুলিও টানা চারদিন বন্ধ রাখা হবে। করা হবে স্যানিটাইজ। যদিও পোস্তা বাজার ও অন্যান্য কিছু বাজার যেগুলি থেকে গোটা শহরে খাদ্য দ্রব্য ও অন্যান্য অপরিহার্য সামগ্রী সরবরাহ করা হয় সেগুলি খোলা থাকবে। তবে সেখানেই সোশ্যাল ডিসটেস্ট মানা হবে। স্যানেটাইজ করা হবে বাজার। প্রত্যেকদিন বাজার পরিষ্কার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত সংগঠনের। সংগঠনের প্রধান সুশীল পোদ্দার জানিয়েছেন, "আমাদের সকল ব্যবসায়ী সদস্যদের কাছে আমাদের আবেদন তারা যেন আগামী চারদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত তাঁদের দোকান পাট বন্ধ রাখেন।" তিনি আরও বলেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তাতে গোষ্ঠী সংক্রমণ অর্থাৎ 'চেইন' ভাঙাটা খুবিই জরুরি। সেদিক বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠন।
বরানগর-কামারহাটিতে ইতিমধ্যে কড়া ব্যবস্থা
সংক্রমণের নিরিখে কলকাতার পরেই সবথেকে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগণাতে। কার্যত এলাকার প্রত্যেক বাড়িতে করোনার সংক্রমণ ঘটেছে! এমনটাই আশঙ্কা প্রশাসনের। সেদিকে তাকিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার বরানগরে নির্দিষ্ট সময়ের পর বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট, বরানগর থানা ও বরানগর পুরসভার এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বরানগরে বাজার ও দোকানপাট খোলা থাকবে। তারপর আর বাজার, দোকান খোলা রাখা যাবে না। কামারহাটি পুরসভা এলাকাতেও কার্যত একই সিদ্ধান্ত। দুপুর তিনটের পর থেকে কামারহাটি পুরসভা এলাকায় বন্ধ থাকবে সমস্ত দোকানপাঠ। বাজার এবং শপিং মল।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে
প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। গত চব্বিশ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ২০৭ মানুষ। একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৭৭ জনের। সবমিলিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১১ হাজার ১৫৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮২১ জন। কলকাতাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ২২জন। কলকাতার পরেই উত্তর ২৪ পরগণায় সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। ৩৭৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের।