সন্তানই নেই, সন্তানকে মারধরের অভিযোগ স্ত্রীর! পুরুষদের সুরক্ষায় আইনি লড়াইয়ে স্বামী
আইনকে হাতিয়ার করে কিছু মহিলা পুরুষদের বিপাকে ফেলেন। উত্তর ২৪ পরগনার তমোঘ্ন দাসের ক্ষেত্রে তেমনই ঘটেছে বলে দাবি তাঁর আইনজীবীর।
আইনকে হাতিয়ার করে কিছু মহিলা পুরুষদের বিপাকে ফেলেন। উত্তর ২৪ পরগনার তমোঘ্ন দাসের ক্ষেত্রে তেমনই ঘটেছে বলে দাবি তাঁর আইনজীবীর। দাবি পুরুষদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মী নন্দিনী ভট্টাচার্যেরও। অভিযোগ, স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে বিপাকে ফেলতে গিয়ে আদালতে মিথ্যে হলফনামা দিয়েছেন স্ত্রী। এই মিথ্যা হলফনামা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁর বিরুদ্ধে পারজুড়ি মামলা দায়ের করে লড়াইয়ে নেমেছেন তমোঘ্ন।
উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বাসিন্দা তমোঘ্ন দাস। পেশায় সরকারি কর্মী। ২০১০ সালে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের বাসিন্দা পয়োধি বণিকের মেয়ে পিয়ালির সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই পিয়ালির বনিবনা হচ্ছিল না তমোঘ্নর পরিবারের সঙ্গে। সেই কারণে তমোঘ্ন আলাদা ফ্ল্যাট নেন দমদমের দুর্গানগরে।
কিন্তু অশান্তির শেষ হয়নি তারপরও। সেই কারণেই বিয়ের চার বছরের মাথায় বিবাবিচ্ছেদের মামলা দায়ের হয়। তারপরেই পিয়ালির পরিবার খোরপোশের মামলা দায়ের করে। এই মামলাতেই তমোঘ্নের বিরুদ্ধে তাঁকে ও তাঁদের সন্তানকে মারধরের অভিযোগ আনেন স্ত্রী পিয়ালি। তমোঘ্নর বিরুদ্ধে পণ নেওয়ার অভিযোগও দায়ের করা হয়।
তমোঘ্ন আদালতে পাল্টা সওয়ালে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে ফাঁসাতে চাইছেন পিয়ালি। তাঁরা নিজেরা পছন্দ করে বিয়ে করেছিলেন। তাই পণ নেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তিনি কোনও পণ নেনওনি। আর তাঁদের কোনও সন্তানই নেই, তাই সন্তানকে মারধরেরও কোনও প্রশ্ন ওঠে না।
এরপর সন্তানের জন্ম শংসাপত্র পেশ করতে পিয়ালিকে নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু কোনও শংসাপত্র জমা না পড়ায় মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। এদিকে পুলিশের তদন্তেও পণ নেওয়ার কোনও সত্যতা নেই। এরপরই মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে প্রতারণা অভিযোগে বিচার চেয়ে মামলা করেন তমোঘ্ন।
তমোঘ্ন কেন্দ্রীয় বিচার বিভাগের কাছে নালিশ জানান, গার্হ্যস্থ হিংসার মামলায় পণ সংক্রান্ত মিথ্যা তথ্য দিলে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল হয় অভিযুক্তের। কিন্তু এ দেশে পণের বিষয়ে পুরুষদের সুরক্ষায় কোনও আইন নেই। পণ নেওয়া এবং সন্তানকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার স্ত্রীর কেন সাজা হবে না, তা জানতে চেয়ে কেন্দ্রীয় বিচারবিভাগে আবেদন জানান তমোঘ্ন। কেন্দ্র বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্টকে।
তমোঘ্নর অভিযোগ, আইনের সুযোগ নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে আমার স্ত্রী আমাকে ও আমার পরিবারকে ফাঁসানো চেষ্টা করছে। আমার সামাজিক সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং আমাকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। তমোঘ্নর আইনজীবী জানান, শুধু মামলার আবেদনেই ভুল তথ্য দেওয়া নয়, আদালতে মিথ্যা হলফনামাও দিয়েছেন ওই মহিলা। তার পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৩ ধারায় জঙ্গিপুর আদালতে পারজুড়ি মামলা দায়ের করেছি আমরা। পুরুষদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মী নন্দিনী ভট্টাচার্য-রাও এ প্রসঙ্গে তমোঘ্নর পাশে দাঁড়িয়েছেন।