মোদীর নেক্সট টার্গেট বাংলা, কোন পথে হবে মমতা-বিদায়! ছক তৈরি বিজেপির
এবার নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের টার্গেট দিদির বাংলা। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে। সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনকেই পাখির চোখ করে বাংলার গ্রাম দখলের নিশানা স্থির করছে বিজেপি।
মোদী-রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখা এবং কংগ্রেসের কাছ থেকে হিমাচল প্রদেশ কেড়ে নেওয়ার পর এবার নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের টার্গেট দিদির বাংলা। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে। সেই পঞ্চায়েত নির্বাচনকেই পাখির চোখ করে বাংলার গ্রাম দখলের নিশানা স্থির করছে বিজেপি। বিজেপি পরিকল্পনা কষছে, কোন অঙ্কে পৌঁছনো যায় নির্দিষ্ট লক্ষ্যে।
উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয়ের পরই বিজেপি টার্গেট করেছিল উত্তর-পূর্ব ভারতকে। সেইমতো অসম ও মণিপুরে তাঁরা সফল গেরুয়া ধ্বজা ওড়াতে। ইতিমধ্যে বিহারও বিজেপির দখলে চলে এসেছে। মাঝে বাদ রয়ে গিয়েছে বাংলা, ওড়িশা আর ত্রিপুরা। আপাতত এই তিন রাজ্যই তাঁদের পাখির চোখ। এরই মধ্যে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে।
বাংলা জয়ের লক্ষ্যে সংগঠনে জোর
বাংলা বিজয়ের লক্ষ্যে মোদী-অমিত শাহরা কতকগুলি পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেছেন। তাঁদের প্রথম লক্ষ্যই হল বাংলায় সংগঠন বাড়ানো। আর সেই কারণেই সারদা-কাঁটা উপেক্ষা করে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ভাঙিয়ে মুকুল রায়কে নিজেদের শিবিরে তুলে নিয়েছে। মুকুল রায়কে দিয়ে শাসক দল তৃণমূলকে ভাঙানোই তাঁদের মূল উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্যেই তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ ও নিচুতলার কর্মীদের এনে বিজেপি সংগঠন বাড়ানোর খেলা ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে।
বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরণের তাস
২০১৬-তে দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। কিন্তু চেষ্টার ত্রুটিও করেনি। এবার সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগোতে চাইছেন অমিত শাহরা। অমিত শাহ ইতিমধ্যেই দুবার বাংলায় এসেছেন। দলিত ভোটারদের বাড়িতে খেয়েছেন। তাঁদের মূল লক্ষ্য দলিত ও সংখ্যালঘু ভোট একত্রিত করা। সেই টার্গেটে এগিয়ে চলেছে তারা। সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসানোরও চেষ্টা যেমন চলছে, দলিত ভোটকেও কেন্দ্রীভূত করতে চাইছে পঞ্চায়েত দখলের লক্ষ্যে।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ
তৃণমূলের সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি বড় হাতিয়ার বিজেপির কাছে। তারা এই ইস্যুকে কাজে লাগাতে চাইছে যে কোনও উপায়ে। তৃণমূল যে শুধু ভোটের স্বার্থেই এই তোষণ চালায়, সংখ্যালঘু উন্নয়নের ব্যাপারে তারা যে দিশাহীন, তা তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। আর এই তোষণ নীতির বিরোধিতা করে মেরুকরণের পথ তৈরি করাও সম্ভব বলে বিশ্বাস বিজেপি নেতৃত্বের।
ধর্মীয় কার্ড আরোপ করা
রাজ্যে এবার রামনবমীর মতো উৎসবকে রাজনীতির আঙিনায় ব্যবহার করে বিজেপি অনেকাংশে সফল। রাজ্যজুড়ে এর সুদূর প্রসারী ফল পাওয়া গিয়েছিল। তারই জেরে হনুমান জয়ন্তী যাতে বিজেপি হাইজ্যাক না করতে পারে, তার জন্য শাসক দল উঠে পড়ে লেগেছিল। শাসক মনে যে বিজেপি চিন্তার ভাঁজ ফেলতে পেরেছিল রামনবমীতে অস্ত্রমিছিল করে, তাকেই দলগত সাফল্য বলে মনে করেছিল বিজেপি।
রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তোপ
সারদা-নারদের মতো দুর্নীতে জড়িত এ রাজ্যের শাসক দলের নেতারা। সেই সুবিধা নিতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। এর আগে সারদা-নারদের কোনও প্রভাব না পড়লেও, আন্দোলন জারি রাখতে চাইছে এই দুর্নীতি ইস্যুতে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচারই তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য। গ্রামে গ্রামে এই আন্দোলন পৌঁছে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য।