এখন বিজেপির ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’ মুকুল! সবং-ফ্যাক্টরে ‘ভ্যানিস’ দিলীপ-রা
নতুন দলেও মুকুল সেই পুরনো ভূমিকায়। ক্রাইসিসি ম্যানেজার হয়েই সবং উপনির্বাচনে লড়াইয়ের রসদ খুঁজছেন। সবংয়ের দায়িত্ব প্রকারান্তরে তাঁর কাঁধেই এসে পড়েছে।
রাজ্যের প্রতিটি ব্লক তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে দীর্ঘ ২০ বছর তিনি ভোট-অঙ্ক সামলে এসেছেন 'কৌটিল্যে'র মতোই। এবার তাঁর নতুন দলেও মুকুল সেই পুরনো ভূমিকায়। ক্রাইসিসি ম্যানেজার হয়েই সবং উপনির্বাচনে লড়াইয়ের রসদ খুঁজছেন। সবংয়ের দায়িত্ব প্রকারান্তরে তাঁর কাঁধেই এসে পড়েছে। প্রথম যুদ্ধেই তিনি তৈরি লড়াই দিতে।
বিজেপিতে আসার পর দুমাসের মধ্যেই তাঁকে মুখোমুখি হতে হচ্ছে নির্বাচনী যুদ্ধের। তিনি এ কাজে বিশেষ পারদর্শী। তা নিয়ে কোনও চিন্তা নেই তৃণমূলের প্রাক্তন ভোট ম্যানেজারের। এখন শুধু তাঁকে খেলতে হবে অজানা-অচেনা ময়দানে। সহ-খেলোয়াড়দের ক্ষমতা সম্বন্ধে এখনও তিনি অন্ধকারে। তবু তিনি অকুতোভয় এই অসম লড়াইয়ে।
দিলীপ ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হলেও সবং উপনির্বাচনের দায়িত্ব বর্তেছে কার্যত মুকুল রায়ের উপর। মুকুলের ভোট-ম্যানেজ ক্ষমতার উপর মর্যাদা রেখেই তাঁকে পরখ করে নেওয়া বিজেপির একটা কৌশল। আর দিলীপ ঘোষ-রা আগে বহুবার পরীক্ষিত। তাই মুকুল রায়কেই ভরসা করছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। দিলীপ-সহ অন্যান্য রাজ্য নেতাদের একপ্রকার বার্তা দেওয়া হয়েছে মুকুলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে।
তারপর পশ্চিম মেদিনীপুরে মুকুল রায়ের নিজস্ব একটি বেস রয়েছে। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর শিবির থেকে এক প্রাক্তন বিধায়ককে টেনে এনেছেন দলে। আর সবংয়েও মুকুলপন্থীরা পা বাড়িয়ে রয়েছেন। যে সবংয়ে বিজেপির কিছুই ক্ষমতা ছিল না, সেখানে লড়াই করার জায়গায় দল গিয়েছে মুকুল রায় ফ্যাক্টরকে কাজে লাগিয়েই।
আগামী ২ ডিসেম্বর সবংয়ে মুকুল রায় জনসভা করতে চলেছেন বিজেপির হয়ে। সেই মঞ্চে তিনিই প্রধান মুখ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সবংয়ে এখন জার্সি বদল করার পর মুকুল রায় কতথানি ম্যাজিক দেখাতে পারেন, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলও তা নিয়ে ইতিমধ্যে চর্চা শুরু করেছে।
এমনকী বিজেপিতে প্রার্থী বাছাইও হচ্ছে মুকুল রায়ের কথা মেনে। কার্যত তিনিই চূড়ান্ত রূপ দেবেন প্রার্থী বাছাইয়ে, সেই অধিকারও তাণঁকে দেওয়া হয়েছে। এবং পরবর্তী দুটি কেন্দ্রে উপনির্বাচনের রূপরেখা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত যুদ্ধে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করার পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন তিনিই। শুধু কতখানি ফল দিতে পারেন তিনি, তারই অপেক্ষায় দল। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার চাবিকাঠিও এই ফলাফল।