অমিতাভের মৃত্যুতে তোপের মুখে মমতার সরকার, ফেসবুকে কী লিখলেন মুকুল
সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিকের মৃত্যুর ঘটনায় বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। সদ্য তৃণমূলত্যাগী মুকুল রায়ও সেই একই পথে হাঁটলেন।
পাহাড়ে বিমল গুরুং পাকড়াও অভিযানে গিয়ে শহিদ হয়েছেন পুলিশ অফিসার অমিতাভ মালিক। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুকুল রায়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সুরে সুর মিলিয়ে মুকুল রায় জানালেন, অমিতাভের মৃত্যুর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই দায়ী।
শনিবার রাতে মুকুল রায় তাঁর ফেসবুক পেজে রাজ্য পুলিশের নিহত সাব ইন্সপেক্টর অমিতাভ মালিকের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেন। তিনি লেখেন- 'অমিতাভের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই ঘটনায় রাজ্য সরকার নিজের দায়িত্ব এড়়াতে পারে না। গোয়েন্দা রিপোর্টে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র থাকার কথা জানানো সত্ত্বেও আগাম প্রস্তুতি না নিয়ে কেন নিরপরাধ প্রাণগুলোকে বলি দেওয়া হচ্ছে।'
এদিন দিলীপ ঘোষের কথার সুরই ধরা পড়েছে মুকুলের ফেসবুক-বার্তায়। তফাৎ শুধু এই যে, দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন- 'প্রশিক্ষণ ছাড়াই পুলিশদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে পাহাড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড়-উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্যই অমিতাভের মৃত্যু হয়েছে।' সেখানে সমঝদারের মতো মুকুল রায় লিখলেন, 'আগাম প্রস্তুতি ছাড়া পাহাড়ে নিরপরাধদের প্রাণ বলি দেওয়া হচ্ছে।'
রাজ্য সরকারের উপর পুরোপুরি দায় চাপিয়েছেনে মুকুল রায়ও। অধিকাংশই যেখানে মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুংয়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, তখন বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। সদ্য তৃণমূলত্যাগী মুকুল রায়ও সেই একই পথে হাঁটলেন। তাঁকে এখন নতুন করে মমতা বিরোধী বলে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্যই তাঁর রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই তোপ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কারণ, মুকুল রায় দল ছাড়ার পরও আর্থিক কেলেঙ্কারি ইস্যুতে মমতার পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি একেবারে ভালো চোখে নিচ্ছে না বিজেপি। ফলে তাঁকে নিয়ে বিজেপির অন্দরেও ধন্দ তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় তাঁকে সত্যিই তৃণমূল বিরোধী বলে প্রমাণ দিতে হচ্ছে। অমিতাভের মৃত্যুতে মমতার সরকারকে দায়ী করার পিছনে সেই অঙ্কও কাজ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মুকুল রায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়, তবে তিনি যে তৃণমূল বিরোধিতার লাইনেই থাকবেন তা ইতিমধ্যেই শিরোধার্য করেছেন প্রাক্তন সাংসদ। রাজ্যসভার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েই তিনি তৃণমূল বিরোধিতার লাইনে হেঁটেছিলেন। শুধু সারদা-নারদ প্রসঙ্গ ছাড়া সবকিছুতেই মমতার সরকারকে তিনি বিঁধেছেন। এমনকী তৃণমূলের পরিবারতন্ত্র নিয়েও সরব তিনি।
এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে মুকুল রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে এসেছেন। বলেছেন রাজ্যে তৃণমূলের আমলে স্বচ্ছ ভোট হয় না। এবার অমিতাভ মালিকের মৃত্যু প্রসঙ্গেও একইরকম সরব তিনি। তিনি মমতার সরকার বিরোধী অবস্থানে অটুট।