মুকুল-দিলীপ জুটি বাঁধলেন মিশন একুশের ভোটে! ‘আনকনভেনশনাল জোড়ি’ কি সুপারহিট হবে
মুকুল-দিলীপ জুটি বাঁধলেন মিশন একুশে! ‘আনকনভেনশনাল জোড়ি’ কি সুপারহিট হবে
মুকুল রায় ছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। বিজেপিতে যোগ দিয়েও গুরুত্বের আসনে বসেছেন। আর দিলীপ ঘোষ খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি। উভয়ের ইগোর লড়াই রয়েছে ঠিকই, তবু ২০২১-এর আগে তাঁদের মধ্যেই সখ্যতার সেতুবন্ধন হল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উভয়েই হাতে হাত ধরলেন। শপথ নিলেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ার।
দিলীপ-মুকুলের ‘আনকনভেনশনাল জোড়ি’র পথচলা
প্রকৃত অর্থেই দিলীপ-মুকুলের ‘আনকনভেনশনাল জোড়ি'র পথচলা শুরু হল ২০২১-এর লক্ষ্যে। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা বাংলায় বিজেপিকে জয় এনে দিতে জোট বাঁধলেন যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলে। এদের মধ্যে একজন সুদক্ষ ভোটকৌশলী এবং সংগঠন তৈরিতে পটু। অন্যজন যথার্থ অর্থেই পিঞ্চহিটার, তাঁর নিজের কথাতেই বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করা লোক।
মুকুল-দিলীপের জোড়ি সুপারহিট হবে, নাকি.
এখন দিলীপ-মুকুল উভয়েরই লক্ষ্য শুধু বল বাউন্ডারিতে পাঠানোই নয়, বোলারের মানসিকতা নষ্ট করে দেওয়াও তা্ঁদের উদ্দেশ্য, যাতে বোলার সঠিক দিশায় বল করতেই না পারেন এই জুটির বিরুদ্ধে। উভয়ে উল্টোপথে হাঁটতে পছন্দ করলেও দুজনের জোড়ি সুপারহিট হলে বাংলায় বিজেপির পায়ের তলায় মাটি শক্ত হবে বলাই যায়।
২০২১-এ স্বপ্নপূরণে কাঁধে কাঁধ মুকুল-দিলীপের!
বাংলায় এবার বিজেপির শাসন প্রতিষ্ঠা করাই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন আর বেশি দূরে নয়। মাত্র আট মাস সময় রয়েছে। তার আগে নিজেদের মধ্যে অশান্তি ভুলে হাতে হাত মেলালেন বঙ্গ বিজেপির দুই প্রধান স্তম্ভ মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফলের পর বিধানসভা দখল আর অলীক কল্পনা নয় বিজেপির, তাই কোমর বেঁধেই এবার নামছেন তাঁরা।
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিরোধ প্রসঙ্গে মুকুল রায়
মুকুল রায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিরোধ প্রসঙ্গে বলেন, "এটি সত্য নয়। এসবই কোনও একটা শ্রেণির রটনা। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ মহমারীর রূপ নিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাকে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দিলীপদা আমাদের দলের সভাপতি। তিনি এমপি এবং একজন যোদ্ধা। আমি বিজেপির সঙ্গে আছি, কোথাও যাচ্ছি না।"
মুকুলদার প্রশংসায় ‘ফ্রন্ট-প্লেয়ার’ দিলীপ ঘোষ
দিলীপ ঘোষ সম্প্রতি নিজেকে ‘ফ্রন্ট-প্লেয়ার' হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। পাশাপাশি জানিয়েছেন, মুকুল রায়কে শংসাপত্র দেওয়ার তিনি কে! মুকুলদা বলেছেন যে তিনি বিজেপিতে রয়েছেন এবং তিনি বিজেপিতেই থাকবেন। আমি লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজ্য বিজেপি সভাপতি ছিলাম। তারপরে কোনও অভিযোগ নেই এবং আমরা বাংলায় বেশ কয়েকটি আসন জিতেছি। এর পরে আমাকে আবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসাবে চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আমরা একসঙ্গেই তৃণমূলে বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।
একই দিনে জোড়া বৈঠকে বরফ গলে জল
মুকুল রায়ের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দিল্লিতে বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা একই দিনে বৈঠক করেন। তারপরই বরফ গলে। উভয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার বার্তা দেন বিজেপির পতাকা নিয়ে। এবং মঙ্গলবার সেই ছবিও দেখা যায়। একইসঙ্গে পাশাপাশি বসে তাঁরা ২০২১-এর রূপরেখা তৈরি করতে বৈঠক করেন।
বিরোধ ভুলে একই পথে হাত ধরে চলবেন মুকুল-দিলীপ
উল্লেখ্য, দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপির বৈঠকের পর থেকেই মুকুল রায় ও তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দূরত্ব বাড়ে। তারপর দিলীপ ঘোষের কিছু কথা বঙ্গ বিজেপির মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি করে। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, দিলীপ ঘোষের একা পরিবর্তনের বার্তা, বুকে পা দিয়ে রাজনীতি করার কথা নিয়ে জলঘোলা হয়। আপাতত সেই যুদ্ধে বিরতি। এবার একইসঙ্গে পথ চলা শুরু মুকুল-দিলীপের।
মুকুল রায়ের পথ ধরতে পারেন শুভেন্দু! ২০২১-এর আগে ভাঙনের এক নতুন জল্পনা