মুখ্যমন্ত্রী মমতার সফরের মাঝে মিছিল-পাল্টা মিছিলে পাহাড় উত্তপ্ত
এক মাস পরেই গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্থাৎ জিটিএ নির্বাচন। তার আগে দু’পক্ষই নিজেদের অস্ত্রে শান দিতে রাস্তায় নেমে পড়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাহাড় সফরের উত্তাপ ক্রমশই বাড়ছে। সোমবার কালো পতাকা দেখাতে গিয়ে মমতার প্রতিরোধে রণে ভঙ্গ দিয়ে মোর্চার সমর্থকরা চম্পট দিলেও বিমল গুরুং আন্দোলনের পথ থেকে সরছেন না। মুখ্যমন্ত্রী যখন পাহাড়ের একগুচ্ছ কর্মসূচি পালনে ব্যস্ত, তখনই দার্জিলিংয়ে মিছিলের ডাক দিয়েছেন মোর্চা সুপ্রিমো। পাল্টা কার্শিয়াংয়ে মিছিলের আয়োজন তৃণমূল কংগ্রেসেরও। ফলে যুযুধান দুই পক্ষের মিছিল-পাল্টা মিছিলে মঙ্গলবার ফের সরগরম হতে চলেছে পাহাড়।
এক মাস পরেই গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্থাৎ জিটিএ নির্বাচন। তার আগে দু'পক্ষই নিজেদের অস্ত্রে শান দিতে রাস্তায় নেমে পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার মিরিকের সভা থেকেই জিটিএ দখলের ডাক দিয়েছেন। বলেছেন, উন্নয়ন চাইলে তৃণমূলকে জেতান। এতদিন রাজ্য টাকা দেওয়া সত্ত্বেও পাহাড়ে কোনও কাজ হয়নি উন্নয়নের। তাই উন্নয়ন করতে গেলে তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনা জরুরি।
সোমবারই পাঠ্যক্রমে বাংলা ভাষা আবশ্যিকের প্রতিবাদে গর্জে উঠেছিল মোর্চা। তার জবাব মিরিকের মঞ্চ থেকে দেন মমতা স্বয়ং। তিনি বলেন, বাংলা ভাষা নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করছে মোর্চা। পাহাড়ে বাংলা ভাষা আবশ্যিক নয়, ঐচ্ছিক বলে জানিয়েও মমতা পাহাড়বাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, বাংলায় থাকতে হলে বাংলা পড়তে হবে। বাংলা শিখতে আপত্তি কোথায়? প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এরপর মোর্চাকে লক্ষ্য করে তৃণমূল সুপ্রিমোর বার্তা, পাহাড়ে বাংলা ও নেপালির মধ্যে অহেতুক ভাগাভাগির চেষ্টা চলছে। এই বিভাজন মেনে নেবে না রাজ্য। কিন্তু মমতার হুঁশিয়ারিতে যে মোর্চা নেতা বিমল গুরুং থমকে যাননি, তার প্রমাণ মঙ্গলবার ফের বাংলা ভাষা আবশিক্যের প্রতিবাদে দার্জিলিংয়ে মিছিলের ডাক। এদিন মমতার বিরুদ্ধে যেমন এই মিছিল থেকে হুঙ্কার ছাড়বেন মোর্চা সমর্থকরা, তেমনই তৃণমূলও মদন তামাং হত্যাকারীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবিতে মিছিল করবে।
কার্শিয়াংয়ে মদন তামাং হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে মিছিলে আওয়াজ উঠবে বিমল গুরুংদের বিরুদ্ধে। ফলে পাহাড়ের দুই প্রান্তে দুই মিছিল ঘিরে যুযুধান দুই পক্ষ সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হচ্ছে। এই মিছিল থেকেই যে জিটিএ নির্বাচনের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে যাবে, তাও বলার অপেক্ষা রাখে না। আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ জারি থাকছেই, তার সঙ্গে এবার জুড়ছে মিছিল-প্রতিবাদ। প্রশাসন পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতে তৎপর।