আফরাজুলে সরব, নীরব হেমন্তে! পাঁচদিন পর দেহ ফিরলেও মমতার প্রশাসনের ভূমিকায় প্রশ্ন
কেরালায় রহস্যজনকভাবে খুন হওয়া বাঁকুড়ার যুবক হেমন্ত রায়কে নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। তাঁর দেহ দীর্ঘ টালবাহানার পর বাঁকুড়ার গ্রামে ফিরল।
রাজস্থানে খুন হওয়া মালদহের আফরাজুলকে নিয়ে রাজ্য তোলপাড় হয়ে গেলেও কেরালার যুবকের ক্ষেত্রে নিশ্চুপ প্রশাসন। কেরালায় রহস্যজনকভাবে খুন হওয়া বাঁকুড়ার যুবক হেমন্ত রায়কে নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। তাঁর দেহ দীর্ঘ টালবাহানার পর বাঁকুড়ার গ্রামে ফিরল। কিন্তু শাসকদল বা প্রশাসনের তরফে একটি মালাও পেল না ভিনরাজ্যে হিংসার শিকার হওয়া এই নিহত শ্রমিক।
শুক্রবার গভীর রাতে বাঁকুড়ার গ্রামে পৌঁছয় হেমন্ত রায়ের মৃতেদহ। সন্ধ্যায় তাঁর কফিনবন্দি দেহ দমদম বিমানবন্দরে নামে। তারপর মরদেহবাহী শকটে হেমন্তর দেহ বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয় হেমন্ত রায়ের দেহ। তারপর গভীর রাতে বাঁকুড়ার ইন্দাসে পৌঁছয় এবং শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয়।
কিন্তু শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা আফরাজুলের ক্ষেত্রে যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, হেমন্তের ক্ষেত্রে তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। রাতের অন্ধকারে সুদূর কেরালা থেকে তাঁর দেহ এসেছে বাঁকুড়ার গ্রামে। তারপর শ্মশানের চুল্লিতে নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে তাঁর নশ্বর দেহ। হেমন্তের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো বলতে শুধু বিধায়কের আশ্বাস।
সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ক গুরুপদ মেটে জানিয়েছেন, প্রশাসন এই পরিবারটির পাশে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে নিহত শ্রমিক হেমন্তের স্ত্রীকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চাকরি দেওয়া হবে। শীঘ্রই এই নির্দেশ কার্যকরী হবে। তিনি হেমন্তের পরিবারকে সমবেদনা জানান।
এই বছরই দুর্গাপুজোর নবমীর দিন কাজের সন্ধানে কেরালা গিয়েছিলেন হেমন্ত। সেখানে পৌঁছে পানাভল্লি গ্রামে একটি দোকানে মেকানিকের কাজ নেন তিনি। সোমবার খবর পাওয়া যায় হেমন্তর গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়েছে। বাড়ির বাইরে থেকে দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, তাঁকে গলার নলি কেটে খুন করা হয়েছে। কেরালা পুলিশ দেহ ময়নাতদন্ত করে। পরিবার ফের ময়নাতদন্তের দাবি জানানোয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফের তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত হয়।
পরিবারের দাবি মেনেই প্রশাসন সমস্তরকম সহযোগিতা করেছে। বিশেষ অনুমতি নিয়ে রাতে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তারপর দেহ সৎকার করা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করা হয় এই ঘটনায়।