বড় বড় কথা তাঁর না-পসন্দ, শিল্প থেকে শিক্ষার প্রসারে স্কটল্যান্ডকে ‘বন্ধু’ বানালেন মমতা
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে স্কটল্যান্ডের ভূমিকা দিয়ে শুরু করেছিলেন মমতা। তারপরই তিনি প্রবেশ করেন মূল বিষয়ে।
ভাষণের মুখবন্ধেই ছিল বন্ধুত্বের আহ্বান। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, সবকিছুতেই নিবিড় দুই দেশ। একে একে দৃষ্টান্ত তুলে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন তিনি খালি হাতে ফিরতে বিলেত সফরে আসেননি। বিলেত সফরের একেবারে শেষপর্বে স্কটল্যান্ডের শিল্প সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার শিল্পের পরিবেশ নিয়ে জোর সওয়াল করলেন।
[আরও পড়ুন:বুদ্ধ-জ্যোতিবাবুরা যা পারেননি অবলীলায় তা করে দেখালেন মমতা, স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায় বাংলা]
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে স্কটল্যান্ডের ভূমিকা দিয়ে শুরু করেছিলেন মমতা। তারপরই তিনি প্রবেশ করেন মূল বিষয়ে। তিনি সরাসরি বাংলায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান স্কটিশ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের ৫৬টি সংস্থার কাছে। তাঁর আসল লক্ষ্য যে রাজ্যে বিনিয়োগ টানা, তা বুঝিয়ে দিলেন পরতে পরতে।
শুধু শিল্পই নয়, তিনি শিক্ষাক্ষেত্রেও দু-দেশের নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলার কথা বলেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে দায়িত্ব দেন। অমিত মিত্র সেইমতোই বৈঠক করেন স্কটল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রীর সঙ্গে। সেই বৈঠকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্কটল্যান্ডের এডিনবোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাঁটছড়া বাঁধার কথা হয়।
এদিকে, স্কটল্যান্ডের সঙ্গে বন্ধুত্বস্থাপনের উদ্দেশ্য মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলা স্কটিশ সংস্থাকে আগেই কিছু কাজের বরাত দিয়েছে। এমন নয় যে, এটাই প্রথমবার স্কটল্যান্ডের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ। নির্মল গঙ্গা মিশনে কলকাতার অংশ পরিষ্কারের বরাত দেওয়া হয় দুই স্কটিশ সংস্থাকে। এরপরই রাজ্যের শিল্পবান্ধব পরিবেশের বর্তমান চিত্র বর্ণনা করেন মমতা।
মমতা বলেন, 'বিগত ছ-বছরে রাজ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।' এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, 'আমি বরাবরই বড় বড় কথা বলা পছন্দ করি না। আমি বিশ্বাস করি কাজে। বাংলা কী ছিল, আজ কী হয়েছে। বাংলার শিল্পে জোয়ার আনার সমস্ত পরিকাঠামো প্রস্তুত। শুধু বিনিয়োগের অপেক্ষা, লগ্নিকারীদের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা দিতে তৈরি আমার সরকার।' মমতা বলেন, 'আপনারা বাংলায় আসুন, শিল্পের পরিবেশ দেখুন। তারপর বিনিয়োগ করুন।'
এদিন মুখ্যমন্ত্রী স্কটিশ শিল্পপতিদের সামনে ব্যাখ্যা করেন, বাংলার স্থিতাবস্থা কত মজবুত। সেইসঙ্গে অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে এখানে। বাংলার ভৌগলিক অবস্থানও যে শিল্পবান্ধব, এদিন তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। বাংলাকে পুর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার বলে উল্লেখ করে, মমতা জানিয়ে দেন, বাংলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ, ময়ানমার, নেপাল, ভুটানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যও চালাতে পারবে স্কটল্যান্ড। সমস্তরকম সংস্কারসাধনের কাজ তিনি করে রেখে দিয়েছেন, এখন শুধু বাণিজ্যে লক্ষ্মীলাভের আশায় বাংলা।
[আরও পড়ুন:'মমতাই আমার আদর্শ', বিলেতের মঞ্চে গর্বিত ঘোষণা, কে এত বড় গুণমুগ্ধ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর]