উত্তরবঙ্গের হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া মমতা, সামনে চা শ্রমিকদের দাবি মেটানোর চ্যালেঞ্জ
করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ আটমাস পর চার দিনের উত্তরবঙ্গ সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ভোটের আগে উত্তরবঙ্গের মন পেতে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার এই দুই জেলার প্রশাসনিক বৈঠকেই একাধিক ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্য়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নূন্যতম পারিশ্রমিক সংক্রান্ত দাবি উত্থাপন করলেন চা বাগান শ্রমিকরা।
পারিশ্রমিক নিয়ে দীর্ঘ দিনের দাবি
প্রসঙ্গত, গত ছয় বছর ধরে চা বাগান শ্রমিকরা তাদের নূন্যতম পারিশ্রমিক ধার্য্য করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। বর্তমানে চা বাগানের শ্রমিকরা প্রতিদিন মাত্র ১৭৬ টাকা করে পায়। এই পারিশ্রমিক অন্তত ২৫৭ টাকা করার দাবিতে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন শ্রমিকরা।
২০১৯ সালে বদলে যায় উত্তরবঙ্গে রাজনৈতিক মানচিত্র
পারিশ্রমিক সমস্যা মেটাতে শ্রমিকরা মালিক পক্ষ এবং ট্রেড ইউনিয়নের সাথে সরকারের একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চেয়ে আসছে ২০১৪ সাল থেকে। অবশ্য ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বিষয়ে খুব একটা আলোড়ন পড়েনি। তার একটি কারণ অবশ্য সেই নির্বাচনে তৃণমূলের নিশ্চিত ভালো ফল। তবে ২০১৯ সালে চিত্রটা বদলেছে।
দাবি মেটানোর চ্যালেঞ্জ মমতার সামনে
২০১৯ সালে তৃণমূলের হাত থেকে উত্তরবঙ্গ ছিনিয়ে নিয়ে সেখানে একাধিপত্ব স্থাপন করেছে বিজেপি। তৃণমূল জমানায় উত্তরবঙ্গ উপেক্ষিত, বিজেপি কার্যত এই বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হয়েছে। তবে ২০২১ সালের লড়াইতে টিকে থাকতে হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে সবদিক দিয়েই বিজেপিকে কুপোকাত করে উত্তরবঙ্গের জনমত নিজের দিকে ফেরাতে হবে। সেই ক্ষেত্রে এত বছরের একটি দাবি মেটানোর চ্যালেঞ্জ থেকে যাচ্ছে তাঁর সামনে।
শ্রমিকদের মন জয় করতে ময়দানে বিজেপি
এদিকে পারিশ্রমিক সংক্রান্ত এই ইস্যুটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আরও বড় চ্যালেঞ্জ কারণ, সম্প্রতি চা শ্রমিকদের পুজো বোনাসের ইস্যুটিতে হস্তক্ষেপ করে মেটাতে সক্ষম হন বিজেপি সাংসদ জন বারলা। উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের ২০ শতাংশ পুজোর বোনাস দেবে চা বাগান মালিকপক্ষ। এর পাল্টা হিসাবে শ্রমিকদের মন জয় করতে গেলে পারিশ্রমিক নিয়ে স্থায়ী সুরাহা করতে হবে মমতাকে।
মমতাকে বিজেপির আক্রমণ
এদিকে উত্তরকন্যাতে বসে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার সর্বস্তরের প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খতিয়ে দেখছেন যাবতীয় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। যদিও উন্নয়ন কর্মসূচির আড়ালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মসূচি সম্পন্ন করছেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।