মোদী সরকারের বঞ্চনার শিকার আগামী প্রজন্ম, ভালো নেতার সংজ্ঞা জানালেন মমতা
মোদী সরকারের বঞ্চনার শিকার আগামী প্রজন্ম, ভালো নেতার সংজ্ঞা জানালেন মমতা
ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। তার ফলে আগামী প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বিরত থাকবে। তাঁরা বঞ্চিত হবে। বুধবার আলিপুর জেল মিউজিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাম না করে কেন্দ্রকে খোঁচা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই ইতিহাসে বিকৃতি ঘটানো হচ্ছে। সঠিক ইতিহাস জানতে দেওয়া হচ্ছে না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলা না থাকলে নবজাগরণ হত না, স্বাধীনতা সংগ্রাম হত না। কিন্তু সেই ইতিহাস আজ বিকৃত করা হচ্ছে। ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে বহু অবদান। আমরা তারই মধ্যে চেষ্টা করে যাচ্ছি কিছু জিনিস সংরক্ষণ করে রাখতে। আলিপুর জেল মিউজিয়ামে অনেক কুঠুরি, ফাঁসি কাঠ সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখানে অনেক বিপ্লবী বন্দি ছিলেন, প্রাণও দিয়েছেন ফাঁসি কাঠে।
নেতাজি সুভাষচন্দ্র থেকে জহরলাল নেহরু, মহাত্মা গান্ধী থেকে রবীন্দ্র্নতা ঠাকুরের স্মরণ করেন তিনি। তুলে ধরেন স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং জাতীয় সংহতিতে বাঙালির অবদানের কথাও। আর সেইসঙ্গে তিনি তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন নেতার সংজ্ঞা নিয়ে। মমতা বলেন, "যে দেশকে নেতৃত্ব দেয়, সেই ভালো নেতা। সব ধর্ম, সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দেন যিনি, তিনিই হলেন নেতা।"
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, এমন একটা দিন আসছে যথন আমাদের সব নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। কেন নতুন ভাবনা এল? রাজনৈতিক স্বার্থে ইতিহাস বদলে ফেলা হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে ভুগোলও। ভুগোল-ইতিহাস বদলে আগামী প্রজন্মকে আসল ঘটনা জানতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের লড়াই সেখানেই। ইতিহাস রক্ষা করতেই আমাদের লড়াই।
আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছরে এসে আলিপুর মিউজিয়ামের উদ্বোধন করলাম। উদ্দেশ্য, বাংলার স্বাধীনতা থেকে শুরু করে প্রাচীন ইতিহাস সংরক্ষণ করে রাখা। যাতে নতুন প্রজন্ম সব জানতে পারে, তার জন্য আমরা এই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। নতুন প্রজন্মকে পুরো সে দিনের কথা জানাতে হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন তাঁর ভাষণে মহাত্মা গান্ধী থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা বলেন। বর্তমান কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম করেননি। তবে তাঁর নিশানায় যে ছিল গেরুয়া শিবির তথা কেন্দ্রের সরকার, তা বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলেরও ধারণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও অন্যান্য রাজ্যের বিজেপি সরকারের দিকেও আঙুল তুলেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আলিপুর মিউজিয়ামে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, ঋষি অরবিন্দ, চিত্তরঞ্জন দাশ, বিধানচন্দ্র রায়ের কুঠুরিগুলি সংরক্ষণ করা হয়েছে। মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নথিপত্র, তাঁত যন্ত্র ইত্যাদি মিউজিয়ামনে রাখা হয়েচে। সংরক্ষণ করা হয়েছে, মূর্তি, ছবি ও বই। দর্শকদরে জন্য তা খুলে দেওয়াও হয়েছে।