সবংয়ে গেরুয়া শিবিরে প্রার্থী কি লকেট! কোন মন্ত্রে পাচ্ছেন যুদ্ধ-জয়ের শক্তি
কে প্রার্থী হবেন গেরুয়া শিবিরে, হঠাৎ তা নিয়ে জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে। মুকুলের হাত ধরে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি, নাকি হঠাউ ভেসে ওঠা লকেট চট্টোপাধ্যায়?
সবং উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই এক এক করে সব দলই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে জোর কদমে প্রচারও শুরু করে দিয়েছে অনেকে। শুধু বাকি বিজেপি। কে প্রার্থী হবেন গেরুয়া শিবিরে, হঠাৎ তা নিয়ে জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে। মুকুলের হাত ধরে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতির পাশাপাশি আরও একটি নাম উঠে এসেছে গেরুয়া তালিকায়। সেই নামটি হল লকেট চট্টোপাধ্যায়। তবে এখনও সিলমোহর পড়েনি কারও নামের পাশেই।
এতদিন উপনির্বাচনের জন্য যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না বিজেপি। মুকুল রায় পদ্মশিবিরে যোগ দিতেই ভ্রু-কুঁচকানো নেতারাই ফের প্রার্থী হতে রাজি হয়ে যাচ্ছেন অবলীলায়। সম্প্রতি তিনটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন সংঘটিত হবে রাজ্যে। তার মধ্যে একটি কেন্দ্র উপনির্বাচন দিন নির্ধারিত হয়েছে। বাকি দুটি কেন্দ্রে নির্বাচন হবে নতুন বছরের শুরুতেই।
উপনির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হতেই যোগ্য প্রার্থী খুঁজে রাখতে তৎপরতা হয়েছিল বিজেপি। তখনই লকেট চট্টোপাধ্যায় থেকে শমীক ভট্টাচার্যদের কাছে প্রস্তাব গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় কেউ রাজি হচ্ছিলেন না বিজেপি প্রার্থী হতে। কেউই চাইছিলেন না আর একবার হারতে। কিন্তু মুকুল রায় বিজেপিতে নাম লেখানোর পরই তাঁদের অনেকে মত বদল করেছে। যারা মত বদল করেছেন, তাঁদের মধ্যে প্রথম নামটিই লকেটের।
২০১৬ নির্বাচনে লকেট চট্টোপাধ্যায় মযূরেশ্বর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁর রাজনৈতিক গুরুত্ব আগের থেকে অনেক বেড়েছে। এখন তিনি বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী। তাই কোনওভাবেই চাইছিলেন এই অবস্থায় আর একটি হার স্বীকার করতে। কিন্তু মুকুল রায় আসার পরই বিজেপি নেতাদের শরীরী ভাষা অনেকটাই বদলে গিয়েছে।
আর তারই প্রমাণ লকেটের এই রাজি হওয়া। যদিও এই ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষ-রা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। ইতিমধ্যে সিপিএম ও তৃণমূল তাঁদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। মঙ্গলবার কংগ্রেসও তাঁদের প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করে এআইসিসি-র অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে। বাকি থাকছে বিজেপি। কর্মী-সমর্থকরা আশাবাদী আগামী দু-একদিনের মধ্যেই তাঁরা তাঁদের প্রার্থীকে পেয়ে যাবেন।
এই মুহূর্তে বিজেপি শিবির থেকে যা শোনা যাচ্ছে- এই কেন্দ্র থেকে লকেট চট্টোপাধ্যায় লড়তে রাজি। কিন্তু তাঁর প্রতিবন্ধকতা হল শারীরিক অসুস্থতা। সম্প্রতি তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। তিনি এখন বিশ্রামে রয়েছেন। দলীয় কোনও কর্মসূচিতেও বের হচ্ছেন না। তবে তিনি প্রার্থী হলে বিজেপি যে ওই কেন্দ্রে লড়াই দেওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করে নিয়ে পারবে, এই যুক্তিতেই নিমরাজি লকেট। কিন্তু সবটাই নির্ভর করছে তাঁর শরীরের উপর।
একান্তই তিনি প্রার্থী হতে না পারলে তখন বিকল্প নামের কথা ভাবা হবে। সেক্ষেত্রে উঠে আসতে পারে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া রাধাকান্ত মাইতির নাম। এই সবংয়ে একটা বছর আগে খুঁজে পাওয়া যেত না বিজেপিকে। এবার মুকুল রায় যোগদানের পর হঠাৎ করেই পালে হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। তারপর এবার মানস ভুঁইয়াকে নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে সবংয়ে। তাঁর স্ত্রী এবার তৃণমূল থেকে পার্থী হয়েছে। কংগ্রেস চাইছে মানসকে উচিত শিক্ষা দিতে। এরই মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসেও মুকুলপন্থীরা বেঁকে বসে আছেন। এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে বদ্ধপরিকর বিজেপি।