অমিল পদ্ম! মাথায় হাত চাষি, ব্যবসায়ী থেকে পুজো উদ্যোক্তাদের
এবছর দূর্গাপুজো উদ্যোক্তারা কি করবেন তা ভেবেই উঠতে পারছেন না। কারণ এবছর পূজোয় ১০৮টি পদ্ম জোগাড় করতে তাদের হিমশিম খেতে হবে তা প্রায় নিশ্চিত। কারণ পদ্মের আকাল।
আকাশে পেঁজা তুলোর মতো সাদা মেঘের ভেলা, মাঠে মাঠে কাশ ফুলের দোলা, বাতাসে শিউলি, ছাতিম ফুলের গন্ধ জানান দিচ্ছে মা আসছেন। সকলেই তাই দেবী দুর্গার বরণে ব্যস্ত। তা সে পুজো মন্ডপ তৈরির কারিগর হোক বা প্রতিমা শিল্পী, বা আলোকসজ্জা শিল্পী।
সবাই নিজেদের অভিনবত্ব তুলে ধরার লড়াইয়ে মেতেছেন। এই পর্বে অবশ্য বাদ যায় না চাষি ভাইরাও। মায়ের পূজার্চনার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ১০৮ টি পদ্মফুল। কথিত আছে, অকালবোধনের সময় একটি পদ্মের অভাবে রামচন্দ্র দেবীকে তুষ্ট করতে নিজের একটি চোখ নিবেদন করেছিলেন। কিন্তু এবছর দূর্গাপুজো উদ্যোক্তারা কি করবেন তা ভেবেই উঠতে পারছেন না। কারণ এবছর পূজোয় ১০৮টি পদ্ম জোগাড় করতে তাদের হিমশিম খেতে হবে তা প্রায় নিশ্চিত। কারণ পদ্মের আকাল।
কখনও রোদ, আবার কখনও বৃষ্টি। আবার কখনও বা মেঘলা আকাশ, কখনও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ পদ্ম গাছ। কুড়ি বেশিরভাগই শুকিয়ে গিয়েছে। তাই মাথায় হাত পদ্ম চাষিদের।
রেল লাইনের ধারে, নদীর পাড়ে নিচু জলাশয়গুলিতে ফুঁটে রয়েছে অসংখ্য পদ্ম। বর্ষার সময় পাঁপড়ি মেলা পদ্মের সেই দৃশ্য দেখতেই অভ্যস্ত বাংলার অধিকাংশ জেলার পদ্মচাষি ও সংগ্রাহকরা। রাজ্যের সীমান্তবর্তী দুই দিনাজপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, মালদা, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনার জেলা গুলি থেকে সারা বছরই পদ্মের জোগান ভালোই থাকে।
কিন্তু এবছর সেই চেনা ছবিটা একেবারেই আলাদা। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার প্রকৃতির নিয়মে ফোঁটা পদ্ম তো দূরের কথা চাষের পদ্মও পরিমাণে অনেক কম হয়েছে। যার মূল কারণ হিসেবে প্রকৃতির খামখেয়ালিপনাকেই দায়ী করছেন পদ্মচাষী ও ব্যবসায়ীরা। দায়ী করেছেন পরপর নিম্নচাপকেও। যে কারণে এবার মার খেয়েছে পদ্মচাষ। বিঘের পর বিঘে জমিতে পদ্মগাছ শুকিয়ে গিয়েছে।
পদ্মচাষী ও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি পদ্মের এই আকালে রীতিমতো মাথায় হাত পূজো উদ্যোক্তাদেরও। কারণ, দূর্গাপূজায় ১০৮টি পদ্ম লাগেই। অন্যবছর যেখানে এক একটি পদ্ম তাঁরা কিনেছেন ১০ থেকে ২০ টাকার মধ্যে এ বছর সেখানে চাহিদার তুলনায় জোগান অর্ধেকের ও কম হওয়ায় দাম বাড়ার সম্ভাবনা প্রায় তিনগুন। মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সেক্ষেত্রে তাদের বাজেটেও টান পড়ার আশঙ্কায় উদ্যোক্তারা।