পণের আগুনে জীবন্ত দগ্ধ, দাউদাউ জ্বলছে বধূর সারা শরীর, চাঞ্চল্য মহেশতলায়
আজও পণের বলি হয় গৃহবধূ। সরকারি বেসকারি হাজারো সচেতনতার সত্ত্বেও পণ দেওয়া ও নেওয়া যে বেআইনি সেই সম্পর্কে সচেতন নয় আমাদের সমাজ। সেই কারণেই পণের শিকার হতে হল মহেশতলার এক গৃহবধূকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার চন্দননগরের বাসিন্দা সামিনাকে জীবন্ত দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ থানার অন্তর্গত চিংড়ি পোতা, বলরাম পুরের বাসিন্দা সামিনার সঙ্গে মহেশতলার চন্দননগর, মোল্লা পাড়ার বাসিন্দা পেশায় দর্জি ব্যবসায়ী আজারউদ্দিন মোল্লার বছর সাতেক আগে নিজেদের পছন্দে বিবাহ হয়। বিয়ের প্রথম দিকে ঠিকঠাক ভাবে থাকলেও কয়েকমাস পর থেকেই কারণে অকারণে সামিনার বাপের বাড়ি থেকে নগদ টাকা আনার দাবি করতে থাকে সামিনার স্বামী আজারউদ্দিন মোল্লা।
আরও অভিযোগ, বাপের বাড়ি থেকে টাকা পয়সা না নিয়ে আসতে পারলেই ঝামেলা হত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। তাতে মদত দিত আজারউদ্দিনের বাড়ির সদস্যরা। বারবার ঝামেলা হওয়ার দরুন কখনও মহেশতলা থানায়, কখনও পাড়া প্রতিবেশীরা বহুবার বহুরকম ভাবে সাময়িক মীমাংসা করে দেন। কিন্তু চলতেই থাকে গার্হ্যস্থ অশান্তি।
মাস পাঁচেক আগে বাড়ি তৈরীর জন্য সামিনার কাছে নগদ টাকার দাবি করে আজারউদ্দিন। বোনকে সুখি রাখতে বোনের দাবি মতো সাবিনার দাদা সোহরাবউদ্দিন মোল্লা এক লক্ষ টাকাও দেয় বলে জানায়। কিন্তু ওই টাকায় শুধুমাত্র ছাদ বানায় আজারউদ্দিন।
চারিদিকে দেওয়াল ছাড়া ঘরেই বসবাস করত সামিনা। ঘরের দেওয়াল তৈরির জন্য আজারউদ্দিন আবারও টাকার দাবি করলে সেই টাকা সামিনার দাদা সোরাবউদ্দিন দিতে পারেনি, তা নিয়েই অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছয় বলে জানা যায়।
এরপর সামিনা মহেশতলা থানায় লিখিত অভিযোগ করার হুমকি দিলে আজারউদ্দিন এবং তার পরিবারের লোকেরা কেরোসিন তেল ঢেলে সামিনার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
জলন্ত অবস্থায় সামিনার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা ছুটে আসে এবং সামিনার বাপের বাড়িতে ফোন করে খবরটা জানালে, বাপের বাড়ির লোক প্রায় নব্বই শতাংশ পোড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় সামিনাকে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালে ভর্তি করে মঙ্গলবার রাতে সোরাব উদ্দিন অর্থাৎ সামিনার দাদা, আজারউদ্দিন সহ শ্বশুর বাড়ির মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করলে আজারউদ্দিনের পরিবারের লোকেরা সকলেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে বলে জানা যায়। পুরো ঘটনাটি নিয়ে মহেশতলা থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।