শিবের কোলে চার ছেলে-মেয়ে! তার পাশে পূজিত অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রী
হুগলীর চন্দননগর ও নদীয়ার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর জনপ্রিয়তা বিশ্বজুড়ে। জনশ্রুতি মতে বাংলার আদি ও প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় হুগলীতে।
হুগলীর চন্দননগর ও নদীয়ার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর জনপ্রিয়তা বিশ্বজুড়ে। জনশ্রুতি মতে বাংলার আদি ও প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় হুগলীতে। হুগলীর সোমরা গ্রামের সোমরা বাজার অঞ্চলের অষ্টধাতুর জগদ্ধাত্রী পুজো প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম।
প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের মধ্যে অষ্টধাতুর দেবীমূর্তি পুজিত হয়। ১১৭২ সাল থেকে দেওয়ান রামশংকর রায়ের হাত ধরে এই পুজো প্রতিষ্ঠিত হয়। কথিত একসময় পাল যুগে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দেওয়ান ছিলেন রামশংকর রায়। স্বপ্নাদেশ পুজোর নির্দেশ পেয়ে প্রতিষ্ঠিত মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু হয়। দেবী এখানে মহাবিদ্যা নামে পূজিত হয়। দেবীর বাহন সিংহ এখানে নরসিংহ রূপে প্রতিষ্ঠিত। এই মন্দিরে দেবী জগদ্ধাত্রীর বাঁ-পাশে শিবের মূর্তি রয়েছে।
এই শিবের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দেবীর বাম পাশে থাকা শিব এখানে একা নন। মহাদেবের কোলে তাঁর চার ছেলে লক্ষী-সরস্বতী-কার্তিক-গণেশ রয়েছে। জনশ্রুতি মতে, মন্দিরে শিবের এই প্রতিকৃতির মাধ্য়মে আগেকার দিনের পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
মন্দিরের বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। মন্দিরের স্থাপত্যশৈলিতে দক্ষিণ ভারতের স্থাপত্যশৈলীর ছোঁয়া রয়েছে। পরবর্তী সময় অবশ্য দক্ষিণ ভারতের এই সব শৈলী লোপ পেয়েছে। মন্দিরের গঠন নয়কোণা বিশিষ্ট্য।
এখানে কোনও বলিদানের নিয়ম নেই। বৈদিক মতে পুজো হয় বলেই এখানে কোনও বলিদানের নিয়ম নেই। নবমীতে দেবীকে ভোগ হিসেবে লুচি, পাঁচ রকমের ভাজা, পোলাও, চিখুড়ি, ছানার তরকারি ও মিষ্ঠান্ন ভোগ দেওয়া হয়।