পাহাড় ইস্যুতে এবার বিজেপিকে টার্গেট মোর্চার, কেন কৌশল বদল গুরুংদের
মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং পাহাড় আন্দোলনের প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দাবি করে এসেছেন। রাজ্য বিজেপির সঙ্গে উপযাজক হয়ে বৈঠক করে গিয়েছেন কলকাতায় এসে। কেন হঠাৎ
পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে এবার কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক শেষে মোর্চা নেতৃত্ব কৌশল বদলে বিজেপি সরকারকেই টার্গেট করল। বিজেপি সদস্যদের উপস্থিতিতেই এদিন প্রশ্ন উঠে পড়ল পাহাড়ে বিজেপিকে জিতিয়ে মোর্চার লাভ কী?
এতদিন রাজ্যকেই শুধু টার্গেট করে গিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। একমুখী সেই আন্দোলনের অভিমুখ এবার বদল করে দিল্লির দিকে ঘোরাতে চাইছেন বিমল গুরুংরা। তারই আভাস মিলল এদিন সর্বদলীয় বৈঠকে। তৃণমূল কংগ্রেস ও বামেরা ছাড়া প্রায় সবদলই এদিন অংশ নেয় মোর্চার ডাকা বৈঠকে। উপস্থিত ছিল বিজেপি ও কংগ্রেসও। ছিল পাহাড়ের সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিই।
এদিন বৈঠক শেষে মোর্চা নেতা বিনয় তামাং জানিয়ে দেন, অনির্দিষ্টকালীন বনধের পথ থেকে এখনই সরবে না তাঁরা। মোর্চার তরফে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়ানো হবে। যুব মোর্চা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আমরণ অনশন ও আত্মাহুতির হুমকি দিয়েছে। সেই আন্দোলনের ডাককে সমর্থন করছে মোর্চাও।
পাহাড়ে রাজনৈতিক দলগুলি এদিন একযোগে প্রশ্ন তোলেন, দীর্ঘদিন মোর্চার কাঁধে বন্দুক রেখে পাহাড়ে জিতে চলেছে বিজেপি। কিন্তু তাদেরকে জিতিয়ে কী লাভ হয়েছে মোর্চার? কী লাভ হয়েছে পাহাড়ের? কেন এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া অনুপস্থিত? তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এদিনের বৈঠকে।
মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং পাহাড় আন্দোলনের প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দাবি করে এসেছেন। রাজ্য বিজেপির সঙ্গে উপযাজক হয়ে বৈঠক করে গিয়েছেন কলকাতায় এসে। দিল্লিতে পড়ে থেকেছেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু বৈঠক করে গিয়েছেন মোর্চা নেতৃত্বের সঙ্গে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এরই মধ্যে রাজনাথ সিং জানিয়ে দেন, 'কেন্দ্র বৈঠকে বসতে তৈরি। কিন্তু কোনওভাবেই রাজ্যকে ছাড়া সেই আলোচনা সম্ভব নয়।'
সেখানেই আপত্তি মোর্চার। তাই এবার সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করল মোর্চা নেতৃত্ব। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে 'শরিক' দলকে পাশে না পেয়েই আক্রমণের রাস্তায় হাঁটলেন তাঁরা। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে বিজেপি বনধ প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করাতেই মোর্চা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটল এদিন। সেইসঙ্গে মোর্চার তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বনধ তোলা হবে না এখনই। এখনও মোর্চা একই দাবিতে অনড়, আগে পুলিশ ও সেনা অভিযান বন্ধ হোক, তারপর বনধ প্রত্যাহার করা হবে।
এদিকে সর্বদলীয় বৈঠকে মুভমেন্ট কো অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি করা হয়েছে। সমস্ত দলের দু'জন করে সদস্যকে সেই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।