নিজেকে নির্দোষ দাবি শোভনের, প্রেসিডেন্সির গেট চাপড়ে কান্না বৈশাখীর
নিজাম প্যালেসে সকালেই দেখা গিয়েছিল শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী তথা বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়কে। বিকেলের দিকে তিনি বেরিয়েও যান। আর মাঝরাতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দেখা গেল 'বান্ধবী' বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বৈশাখী তাঁর পাশেই রয়েছেন বলে দেখিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। এরপরই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের গেটে রণংদেহী মেজাজে দেখা যায় বৈশাখীকে।
প্রথমে বেল, পরে জেল
সোমবার প্রথমে নিম্ন আদালতে জামিন পেলেও হাইকোর্ট সেই জামিনে স্থগিতাদেশ দেওয়ায় রাজ্যের চার হেভিওয়েটকে বুধবার পর্যন্ত থাকতে হবে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারেই। রাত ঠিক একটা কুড়িতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় রাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, কামারহাটির বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র ও প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।
সিবিআইকে তোপ শোভনের
নিজাম প্যালেস থেকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমি নির্দোষ। কোনওরকম অনৈতিক কাজে আমি জড়িত নই। আগেই বলেছি, আবার বলছি। বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা রয়েছে। দেখুন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সঙ্গেই রয়েছেন। বেডরুমে ঢুকে আমাদের নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয়। অথচ সব জায়গায় বলা হচ্ছে বৈশাখী নাকি আমার সঙ্গে নেই! মুকুল রায় বা শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে কিছু বলতে চাননি শোভন চট্টোপাধ্যায়।
রণংদেহী বৈশাখী
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে প্রথমে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি লাগাতার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের গেট চাপড়ে কাঁদতে থাকেন। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র। তিনি বলেন, আমি আমার পারিবারিক বন্ধুদের নিয়ে পরিবারের পাশে থাকতে এসেছি। বাবার ওষুধ প্রয়োজন। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাদের জানার অধিকার আছে ভিতরে কী হচ্ছে। শোভন চট্টোপাধ্যায় হাই সুগার রয়েছে। কিছু খেতে হয়। অথচ দিনভর তাঁকে নিজাম প্যালেসে কিছু খেতে দেওয়া হয়নি। সিওপিডির সমস্যাও রয়েছে। কী এমন অপরাধ করেছেন তিনি? ভোরবেলা মহিলার বেডরুমে চারজন পুরুষ ঢুকে পড়ছেন! রাজ্যপাল এসে দেখে যান। যদিও কিছুক্ষণ আকুতির পর বৈশাখী চট্টোপাধ্যায়দের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
কে কী বললেন?
সুব্রত মুখোপাধ্যায় কিছু বলতে চাননি। মদন মিত্র বলেন, আমরাই খারাপ, মুকুল-শুভেন্দু ভালো। ফিরহাদ হাকিম বলেন, আমাকে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা, স্যানিটাইজেশন, দেহ সৎকারের যাবতীয় ব্যবস্থা করছিলাম। কলকাতার মানুষকে বাঁচাতে দিল না। বিজেপি সিবিআই, ইডিকে কিনে নিতে পারে। কিন্তু বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা রয়েছে। আমি পপুলার। সেজন্য এতো মানুষ এসেছেন। পপুলার হওয়া অন্যায় নয়। আমি ভালো ব্যবহার করেছি। সহযোগিতা করেছি। তাও আমার জামিনের অধিকার কার কথায় কেড়ে নেওয়া হলো? আইনব্যবস্থায় আস্থা রেখে আমরা সেখান থেকে জয়ী হয়ে মুক্ত হবো।