‘অনভিজ্ঞ’ সুকান্ত থাকলেও যুব-মোর্চার অভিযানে ‘অভিজ্ঞ’ দিলীপ গরহাজির, প্রশ্নে তরজা
বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন বনাম বর্তমান সভাপতির মধ্যে কয়েকদিন আগেই অভিজ্ঞতা-তরজা শুরু হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করেছিল, সেই মতানৈক্যের অবসান হবে বিজেপির বিকাশ ভবন অভিযানে। সেখানে একইসঙ্গে মিছিলে হাঁটতে দেখা যাবে বিজেপির বর্তামান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। কিন্তু মিছিলে ছিলেন না দিলীপ।

বিজেপিতে দ্বন্দ্ব, অসন্তোষ ও সংঘাত থেকেই গেল
বিজেপির যুব মোর্চার ডাকে বিকাশ ভবন অভিযান হল এদিন। এই অভিযানে মিছিলে হাঁটতে দেখা যায় যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি তেজস্বী সূর্য, রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ, বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু ছিলেন না প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফলে বিজেপিতে দ্বন্দ্ব, অসন্তোষ ও সংঘাত থেকেই গেল।

অনুপস্থিতিত ঘরে-বাইরে বিজেপি প্রশ্নের মুখে
এখন প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে বিজেপির কেন্দ্রীয় স্তর ও রাজ্য স্তরের নেতারা রয়েছেন, সেখানে কেন সাসংদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ রইলেন না। দিলীপ ঘোষের মতো হেভিওয়েট নেতার অনুপস্থিতিত ঘরে-বাইরে বিজেপিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। তবে কি অভিজ্ঞতা-সংঘাতের কারণেই দিলীপ ঘোষ দূরে সরে থাকলেন বিজেপির এই কর্মসূচি থেকে?

৪২ বছরের তরুণের হাতে দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি
সম্প্রতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, রাজনীতিতে প্রথমে সবাই অনভিজ্ঞ থাকে। তারপর কাজ করতে করতে অভিজ্ঞতা বাড়ে। আমরা ৪২ বছরের এক তরুণকে রাজ্য সভাপতি করেছি। এই সাহস একমাত্র বিজেপিই দেখাতে পারে। আমরা তারুণ্যের উপর ভরসা রাখি তাই ৪২ বছরের তরুণের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়েছি দলের।

দিলীপ ঘোষকে অভিজ্ঞ কটাক্ষ সুকান্ত মজুমদারের
এই অভিজ্ঞতার প্রশ্নে পূর্বসূরিকে ছেড়ে কথা বলেননি বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, আমি রাজ্য সভাপতি হওয়ার সময় সাংসদ হিসেবে আড়াই বছরের অভিজ্ঞতা ছিল আমার। আর দিলীপদা যখন রাজ্য সভাপতি হন, তখন সাংসদ হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা ৬ মাস থেকে ১ বছরের। অভিজ্ঞতা প্রশ্নে এইভাবেই দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন সুকান্ত মজুমদার।

অভিজ্ঞতা নিয়ে দিলীপ বনাম সুকান্ত তরজা, নিবৃত্তি হল না
একুশের বিধানসভায় শোচনীয় পরাজয়ের পরে দিলীপ ঘোষের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রথম থেকেই সুকান্ত মজুমদারের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি এখনও সুকান্ত মজুমদারের পাশেই আছেন বলে দাবি। কিন্তু একুশের নির্বাচনের পরে বিজেপির আরও শোচনীয় অবস্থায় তিনি সুকান্ত মজুমদারের অভিজ্ঞতা কম বলে জল্পনা তৈরি করেছিলেন। এখন অভিজ্ঞতা নিয়ে দিলীপ ঘোষ বনাম সুকান্ত মজুমদার তরজা চলছে। তার নিবৃত্তি হল না এদিনও।

যুব মোর্চার বিকাশ ভবন অভিযানেও অভিজ্ঞতা-কাঁটা
বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষ দায়িত্ব নেওয়ার পরই বাংলায় বিজেপির উত্থান হয়েছিল। ২০১৫ সালের পর দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বাধীন বিজেপি তৃণমূলের চ্যালেঞ্জার রূপে উঠে এসেছিল বাংলায়। ২০১৯-এ তৃণমূলকে ধাক্কা দিয়ে বিজেপি ১৮টি লোকসভা আসন দখল করে। তারপর থেকেই বাংলায় পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বিজেপি। কিন্ত বিজেপি একুশের নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ায় নেতৃত্বে বদল আসে। সুকান্ত মজুমদার দিলীপ ঘোষের স্থলাভিষিক্ত হন। এবার তাঁগের মধ্যে শুরু অভিজ্ঞতার দ্বন্দ্ব। কার কত অভিজ্ঞতা, তা নিয়ে তরজায় জড়াল বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন বনাম বর্তমান সভাপতি। সম্প্রতি যুব মোর্চার বিকাশ ভবন অভিযানেও তার প্রভাব পড়ল।
পিকের কংগ্রেস-সংসর্গ ত্যাগের কারণ কি তৃণমূল আর টিআরএস! ২৪-এর সমীকরণে জল্পনা