আমফানের থেকেও শক্তিশালী ইয়াস! সতর্কবার্তা পাওয়ার পরেই উপকূলবর্তী এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরানোর নির্দেশ
নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরির বার্তা আবহাওয়া দফতরের। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী ২২ মে নাগাদ নিম্নচাপ গভীর থেকে গভীর হবে বলে জানানো হচ্ছে। যদিও যেভাবে সেটি ঘনীভূত হচ্ছে তা পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে বলে আশঙ্
নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় তৈরির বার্তা আবহাওয়া দফতরের। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী ২২ মে নাগাদ নিম্নচাপ গভীর থেকে গভীর হবে বলে জানানো হচ্ছে। যদিও যেভাবে সেটি ঘনীভূত হচ্ছে তা পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে বলে আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের। মনে করা হচ্ছে এই ঝড় যা উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। আর এই ঘূর্ণিঝড় ২৬ মে বিকেল নাগাদ আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে। অনেকে বলছেন আমফানের থেকেও আরও শক্তিশালী হবে এই ঝড়।
বিকেল হতেই মেঘলা আকাশ, বাংলার জেলায় জেলায় আছড়ে পড়তে চলেছে ঝোড়ো হাওয়া
আবহাওয়া দফতরের বার্তা
এদিন দুপুরে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ২২ মে নাগাদ আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। যা ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায়। যা ক্রমশ উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং ২৬ মে বিকেল নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। যার প্রভাবে ২৫ মে বিকেল থেকেই হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হয়ে যেতে পারে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আস্তে আস্তে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে বলেও জানানো হয়েছে।
সতর্ক করা হল রাজ্য সরকারকে
আমফানের কথা মাথায় রেখে সাইক্লোনের জন্য সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখছে নবান্ন। বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সমস্ত বন্দোবস্ত করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। সাইক্লোনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ একটি ভিডিও কনফারেন্সও করা হয় নবান্নের তরফে। ইতিমধ্যে সাইক্লোনের বিষয়ে রাজ্যকে সতর্ক করা হয়েছে আবহাওয়া দফতরের তরফে। আর এরপরেই কোনও খামতি রাখতে চাইছে না রাজ্য।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৬ মে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গে। এরপরেই উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলা প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ত্রাণ শিবিরগুলিকে তৈরি রাখার নির্দেশ
নবান্নের তরফে দেওয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুই জেলায় ত্রাণ শিবিরগুলিকে তৈরি রাখাতে হবে। জেনারেটর, টয়লেট-সহ সব ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে হবে সেখানে। আমফানের কথা মাথায় রেখেই সাধারণের জন্য চাল, কাপড়, তারপুলিন ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা আগে থেকেই করতে বলা হয়েছে। কী কী প্রয়োজন, সেই তালিকাও আজই জমা দিতে হবে জেলা প্রশাসনকে। ঝড়ের আগেই যাতে উপকূলবর্তী এলাকা থেকে লোকজনকে নিয়ে এসে আশ্রয় শিবিরে রাখা হয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মহকুমা বা ব্লক স্তরের অফিসারদের বলা হয়েছে, এই বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ ও পঞ্চায়েতের সদস্যদের কথা বলতে হবে। ঝড়ের আগে মাইকিং করে এলাকায় সতর্কবার্তা দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। আর এর মধ্যে অবশ্যই বাদ যাবে না সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি।
শুধু ত্রান শিবিরের ব্যবস্থাই নয়। সাধারণ মানুষের কাছে ত্রাণের জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থাও করে রাখতে বলা হয়েছে। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে নৌকা, স্পিড বোট, ডুবুরি। সাইক্লোন পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য তৈরি রাখতে হবে গাছ কাটার মেশিন। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাতে কারও মৃত্যু না হয়, সেই ব্যাপারে কড়া বার্তা দিয়েছে নবান্ন। পুলিশের সঙ্গে কথা বলে মহকুমা শাসক যাতে পুরো পরিকল্পনা তৈরি করে ফেলেন, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সংযোগ স্থাপন করতে হবে বিদ্যুত ও টেলিকম বিভাগের সঙ্গেও।
ঝড় শুরু হতে ২৩ মে থেকে
নিম্নচাপের জেরে আন্দামান সাগর এবং সংলগ্ন পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে ২৩ মে থেকে ঘন্টায় ৬৫ কিমি বেগে ঝড় বইতে শুরু করবে। যা পরবর্তী সময়ে বেড়ে ঘন্টায় ৭০ কিমি বেগে হবে। ২৪ থেকে ২৬- মে-র মধ্যে মধ্য এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের বেগ ব্যাপক আকার নেবে। আর ২৫ থেকে ২৭ মের মধ্যে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূলেও তার ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়বে। অন্যদিকে এই নিম্নচাপের জেরে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ২২ ও ২৩ মে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে। কোনও কোনও জায়গায় ভারী বৃষ্টিও হবে। তবে এর প্রভাবে শুধু পশ্চিমবহ্গ কিংবা ওড়িশায়ই নয় অসম এবং মেঘালয়তেও বৃষ্টিপাত শুরু হবে।